ঠাকুরগাঁওয়ে অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে মিষ্টি কুমড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। দাম কিছুটা ভাল থাকলেও গাছের পাতা হলদে বর্ণ ধারণ করায় আশাতীত ফলন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন এ জেলার চাষীরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বিনামূল্যে বীজ ও কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ সহায়তা দেওয়া হলেও এবারের ফলন নিয়ে শঙ্কায় তারা।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কিছুদিন পূর্বে রবি জাতের মিষ্টি কুমড়া ক্ষেত থেকে তুলে বিক্রি করা হয়েছে। খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে। আর কিছুদিনের মধ্যে সেগুলোও বিক্রি করবেন কৃষকেরা। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন, ভুল্লি, বড় বালিয়া, ছোট বালিয়া, আউলিয়াপুর, পুরাতন ঠাকুরগাঁও, আখানগর, ঢোলারহাটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
জেলায় ঢাকা-১, ব্লাক সুইটি, মিতালি, ব্লাক সিটি সেরা ও সোহাগী সহ নানা জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়। এতে বীজ দিয়ে সহযোগিতা করে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কম খরচে অধিক লাভের আশায় ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকেরা দিন দিন অধিক পরিমাণে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করছেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া এলাকার সফল চাষী হাবিব মো: আহসানুর রহমান পাপ্পু বলেন, গত মৌসুমের শুরুর দিকে ভাল ফলন ও দাম পাওয়ায় এ বছর বেশি পরিমাণে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছি। এ মৌসুমে ৩০ একর জমিতে কুমড়া লাগিয়েছি। মাস খানেকের মধ্যে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি শুরু হবে। বর্তমানে বাজারে মনপ্রতি মিষ্টি কুমড়া ৭শ টাকা থেকে ৯শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি ভাল দাম পাব।
আরও পড়ুন : পীরগঞ্জে ৪ জুয়ারী আটক!
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন এলাকার কৃষক সাইফুর রহমান বলেন, ৬ বিঘা (৩শ শতক) জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। গাছে ফুল এসেছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে কিছু কিছু গাছ হলুদ বর্ণের হয়ে গেছে। কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ করছি, সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য। প্রত্যাশা করছি ফলন ভাল হলে ন্যায্য মূল্য পাবো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাসেল ইসলাম জানান, জেলায় ২ ধরনের মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে রবি জাতের কুমড়া ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে রয়েছে। বেশিরভাগ এলাকায় গাছে ফুল ধরেছে, আর মাসখানিকের মধ্যে এ জাতের মিষ্টি কুমড়া বাজারে উঠতে শুরু করবে। তবে অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে ভাইরাসজনিত কারনে কিছু গাছ হলদে বর্ণ ধারণ করায় কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা।
তিনি আরও জানান, এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলা মোট ৩ হাজার ১৯৮০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। রবি জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ শেষে বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে। গত বছরে ১ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয়েছিল।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলায় মিষ্টি কুমড়ার ভাল ফলন হয়। প্রতি বছরের ন্যয় এ বছরও মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে। বর্তমানে বাজারে দামও ভাল রয়েছে, সামনের দিনে এ জাতের মিষ্টি কুমড়ায় কৃষকেরা ন্যায্য মূল্য পাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
ডেস্ক/বিডি/মজিবর
কপি করলে খবর আছে