ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ায় গলা কেটে অটোচালক রিফাত হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও হত্যায় জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
৮ নভেম্বর বুধবার সকালে শহরের হাজীপাড়াস্থ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন ঠাকুরগাঁও পিবিআই’র পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো: মাহফুজ্জামান আশরাফ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো: মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, গত ১৬ অক্টোবর রিফাত বাড়ি থেকে তার অটো চার্জার নিয়ে বের হয়। দুপুরে সে বাসায় খাবার জন্য না আসায় তার স্ত্রী আশা মনি সন্ধায় তাকে ফোন করলে সে জানায়, ২ জন যাত্রী নিয়ে রুহিয়ার দিকে যাচ্ছে। অনেক রাত অবধি তার কোন সন্ধান না পেয়ে স্ত্রী আশা মনি পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনকে বিষয়টি জানালে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখোঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৭ অক্টোবর রুহিয়া থানার ঘুরনগাঁছ কুজিশহর গ্রামের চারপুুকরি হতে মন্ডলাদামগামী রাস্তার পাশে বাঁশ ঝাঁড়ের নিচে থেকে রিফাতের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং তার স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন মরদেহটি রিফাতের বলে সনাক্ত করেন।
বিষয়টি অবগত হয়ে ঠাকুরগাঁও পিবিআই স্ব-উদ্যোগে রিফাতের মামলাটি তদন্তের জন্য অধিগ্রহন করে। পিবিআই টিম মামলার ছায়াতদন্তের এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পঞ্চগড় সদর উপজেলার জিয়াবাড়ী সদ্দারপাড়া গ্রামের মো: হালিম উদ্দিনের ছেলে মো: রবিউল ইসলাম (১৬), একই উপজেলার ভুতমারী গ্রামের মৃত আশরাফ চৌধুরীর ছেলে কামরুল হাসান (২৪), আটোয়ারী উপজেলার ছোট গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত চৈতনের ছেলে এরাজ ওরফে এরাজ উদ্দিন (৬২), তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩২), আলমগীর হোসেন (২৫), রুহিয়া থানার ঘনিমহেষপুর গ্রামের কাশি বর্ম্মনের ছেলে অতুল বর্ম্মন (৩২) ও আটোয়ারী উপজেলার দেলুয়াডার খৌর গ্রামের মো: আজিজুল ইসলামের ছেলে মো: নাছির উদ্দিন (৩৫)।
পিবিআই টিম প্রথমে কামরুলের কাছ থেকে রিফাতের মোবাইল ফোন ও সিম উদ্ধার করে এবং এরই সুত্র ধরে একে একে বাকিদের আটক ও আসামী নাসির উদ্দিনের ঘরের ভেতর থেকে রিফাতের অটো চার্জারটির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তিতে আসামী কামরুল, রবিউল, অতুল বর্ম্মন, নাছির উদ্দিন ঘটনার সাথে জাড়িত থাকার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে ফৌ: কা: বি: ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গতকাল মঙ্গলবার গ্রেফতারকৃত ৭ জনকেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক মো: রবিউল ইসলাম জানান, মাত্র ১৭ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে আসামীদের ধৃত করে মামলার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হই। আসামীরা মূলত: অটো চার্জার রিক্সাটা ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে রিফাতকে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে অটোটা চোরাইমাল গ্রহণকারী সিন্ডিকেটকে দিয়ে দেয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ অক্টোবর সদর উপজেলার রুহিয়া থানার ঘুরনগাঁছ কুজিশহর গ্রামের চারপুুকরি হতে মন্ডলাদামগামী রাস্তার পাশে বাঁশ ঝাঁড়ের নিচে থেকে অটোচালক রিফাতের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মামলাটি ক্লু-লেস থাকায় স্ব-উদ্যোগে মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেয় পিবিআই।
ডেস্ক/বিডি
অটোচালক রিফাত হত্যা রহস্য উন্মোচন