ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়ায় ইতালি প্রবাসি অনিক দাসের বাড়িতে দুই দিন ধরে বিয়ের দাবিতে অনশন করেছে ববিতা দাস (২১) নামে এক প্রেমিকা। ববিতা সদর উপজেলার আখানগর গ্রামের জুলেন্ট দাসের মেয়ে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানাধীন ২০ নং রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের এমপি’র মোড়ের পাশে প্রেমিক অনিক দাস(২৫) এর বাড়িতে অনশনে বসেছে প্রেমিকা ববিতা। অনিক দাস ২০নং রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের অতুল দাসের ছেলে।
ববিতা দাস জানান, আমি যখন ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক্যাল কলেজে পড়ালেখা করতাম তখন থেকে অনিকের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আমাদের সম্পর্ক অনিকের পরিবার মেনে না নিতে চাইলে অনিক আমার বাসায় চলে আসে এবং কোর্টে বিয়ে করে। বিয়ের তিন দিন পর অনিকের পরিবারের লোকজন আমার পরিবারে সাথে যোগাযোগ করে এবং বলে আমরা এই বিয়ে মেনে নেব, দু’জনকে আমরা রুহিয়া ক্যাথলিক মিশনের ফাদারের কাছে নিয়ে যাব।এই বলে ওরা আমাকে অটোচার্জার রিকশায় তুলে এবং অনিককে জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে নেয়। তারা মধুপুর কালিতলায় আসার পর অনিককে কোথায় নিয়ে যায় তা আমি জানিনা। তবে আমাকে জোড় করে ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়ে যায় এবং সেখানে আমার কাছে ডিভোর্স (ছাড়াছাড়ি) পেপারে স্বাক্ষর চায়। আমি কোন স্বাক্ষর দেইনি, এর পরেও তারা বলে আমি নাকি স্বাক্ষর দিয়েছি, আমি কখন কিভাবে স্বাক্ষর দিলাম তা নিজেও জানিনা।
আরও পড়ুন :
এতসব বিষয়ের পর আমার পরিবার আমাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিলে, অনিক কোথায় কিভাবে, আমার স্বামীর মোবাইল নম্বর জোগাড় করে। তাকে অনেক উল্টাপাল্টা কথা বলে ও হুমকি ধামকি দেয়। অনিকের কথা শুনার পর আমার দ্বিতীয় স্বামী বাবু আমাকে অনেক নির্যাতন শুরু করে। এরপর অনিক আবার আমার সাথে যোগাযোগ শুরু করে। আমাকে টাকা পাঠায় খাওয়া দাওয়া সহ দ্বিতীয় স্বামীকে ডিভোর্স করার জন্য বলে। সে বলে দশ বাচ্চার মা হলেও তুমি আমার, আমি তোমাকেই নিয়ে জীবন কাটাবো। তুমি আমার বাসায় চলে আসো, তাই আমি দ্বিতীয় স্বামীকে ডিভোর্স করে চলে এসেছি অনিকের বাড়িতে।
আমার মোবাইলে অনিক আমার অনেক ছবি ও প্রয়োজনীয় তথ্য সহ অনিক আমাকে টাকা পাঠানোর কিছু এসএমএস ছিল। তারা আমাকে গতকাল মঙ্গলবার বিকাল আনুমানিক ৩ টার সময় জোড় করে ধরে ২০নং ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে গিয়ে একটা রুমে আটকে রাখে। আমার মোবাইল ফোনটা কেড়ে নিয়ে সব কিছু ডিলিট করে দেয়। পরে মোবাইলটি আমাকে এনে দেয় এবং বলে তুমি বাসায় চলে যাও। এখন যদি অনিক বা তার পরিবার আমাকে মেনে না নেয় তাহলে আমি এখানে আত্মহত্যা করবো।
এ বিষয়ে অনিক দাস এর বাবা অতুল দাসের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড সদস্য অনিতা রানি সেন জানান, আমাকে কল করলে আমি দুপুর সাড়ে ১২টায় দিকে ঘটনাস্থলে আসি এবং ঘটনার বিবরণ শুনতে পারি। তারা বিকালে মেয়ে এবং তার পরিবার সহ ইউনিয়ন পরিষদে বসবে বলে আমাকে জানায়। ছেলের পরিবারের কয়েকজন মেয়েটাকে পরিষদে নিয়ে আসলে সেখানে বসে কথা বলার মত কোন সুযোগ হয়নি। মোবাইলের ডুকমেন্ট বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোবাইলটা আমাকে রাখতে দিয়েছিল, আমি মোবাইলটা জয়ন্তকে রাখতে দিই। পরে মোবাইলটা ববিতাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান অনিল কুমার সেনের নিকট যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান আমি শুনেছি একটা মেয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন করছে, তিনি বলেন এখন পর্যন্ত কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেনি।
ডেস্ক/বিডি
কপি করলে খবর আছে