জ¦ালানি তেল পেট্রল ও অকটেনের চরম সংকটে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। প্রায় দু সপ্তাহ ধরে চলছে এ সংকট। এতে বিপাকে পরেছে মটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার চালক ও মালিকরা।
জেলার ৩৬ টি ফিলিং স্টেশনে বন্ধ রয়েছে পেট্রল ও অকটেন বিক্রি। দু একটিতে পাওয়া গেলেও দেওয়া হচ্ছে সামান্য পরিমানে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খোলা বাজারে বেশি দামে তেল বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।
এ সংকটের পেছনে মজুদকারীদের দায়ী করছেন জ¦ালানী ব্যবহারকারীরা। অন্যদিকে ফিলিং স্টেশন মালিকরা বলছেন ডিপো থেকে চাহিদার বিপরিতে সরবরাহ না থাকায় এ সংকট তৈরী হয়েছে। ঈদের আগে ফিলিংস্টেশন গুলোতে অকটেন পাওয়া গেলেও এখন আর সেটাও পাওয়া যাচ্ছেনা। গত ৭ তারিখে জেলা প্রশাসন একটি জরুরী বৈঠক করে জেলার ফিলিংস্টেশন মালিকদের সাথে। সভায় মালিকদের সংকট নিরশনে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
সংকটের কারন জানতে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের পার্বতীপুর ডিপোর ব্যবস্থাপক এমরানুল হাসানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পার্বতীপুরে বরাদ্দটা এমনিতে কম থাকে। এদিকে এবছর ঈদের সময়ে চাপটা বেশি ছিলো। কিন্তু বরাদ্দ আরও কমে গেছে। তাই জেলা পর্যায়ের চিহাদা মেটানো সম্ভব হচ্ছেনা।
সংকট সমাধানে পার্বতীপুর ডিপোর পরিবর্তে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি থেকে পেট্রোল সরবরাহের পরামর্শ দিচ্ছে ঠাকুরগাঁও প্রশাসন। তবে বাঘাবাড়ি থেকে পেট্রোল সরবরাহে অনিহা দেখাচ্ছে ফিলিং স্টেশনগুলো। তাই চরম আকারে জ¦ালানি তেল সংকটের জন্যে ঠাকুরগাঁও জেলার ফিলিং স্টেশন গুলোর সদিচ্ছার অভাবকেই দয়ি করছে সংশ্লিষ্টরা।
ঠাকুরগাঁও পেট্রল মালিক সমিতির সাধান সম্পাদক মোস্তাক হোসেন জানান, জেলা প্রশাসনের জরুরি সভার পরে আমরা কিছু জ¦ালানি আনার ব্যবস্থা করি। প্রতিদিন ঠাকুরগাঁওয়ে প্রায় ৯০ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার লিটার জ¦ালানীর প্রয়োজন । কিন্তু তার বিপরিতে আমরা পাচ্ছি ৩০ থেকে ৪০ হাজার লিটার জ¦ালানী তেল। তবে দ্রুতই এর একটা সমাধান আমরা বের করতে পারবো।
জানাগেছে, পার্বতীপুর থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে জ¦ালানি তেল আনতে গাড়ি ভাড়া লাগে ১০ হাজার টাকা। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি থেকে একই পরিমানের জ¦ালানি তেল আনতে গাড়িভাড়া লাগছে ১৮ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে খরচ বেশি হওয়ায় লাভ অনেকটাই কমেযাচ্ছে। তাই বাঘাবাড়ি থেকে ফুয়েল সরবরাহ করতে চাইছেনা জেলার ফিলিং স্টেসন মালিকরা।
ইতোমধ্যে এই রাস্তা অবলম্বন করে জেলার সুপ্রিয় ফিলিং স্টেশন পেট্রোল সরবরাহ করছে। এই বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের সুপ্রিয় ফিলিং স্টেসনের মালিক বাবলুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসনের পরামর্শে বাঘাবাড়ি থেকে পেট্রোল সরবরাহ করা হচ্ছে। আপদ কালীন সময়ে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আমরা বাঘাবাড়ি থেকে পেট্রোল নিচ্ছি। তবে লাভ কম হওয়ায় অতোদূরে হয়তে অন্যরাও যেতে চাইছেনা।
পেট্রোল সংকটে বন্ধ থাকা বাধন-কাকন ফিলং স্টেশনের মালিক এসকল অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, আমরা বাঘাবাড়িতেও যোগাযোগ করেছি। তবে তারাও সংকট দেখিয়ে আমাদের দিতে অনিহা প্রকাশ করেছে।
এই বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান জানান, পেট্রোল সমস্যার সমাধানে কাজ করছি আমরা। একাধিকবার ফিলিং স্টেশনের মালিকদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে বরাদ্দ বাড়ানোর লক্ষে চিঠি প্রেরন করা হয়েছে। আশাকরি দ্রুতই সমাধান পাওয়া যাবে।
বাপ্পী/বিডি
কপি করলে খবর আছে