ঠাকুরগাঁওয়ে মো: হাসান আলী (২৫) নামে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মচারীকে হত্যার অভিযোগে তার স্ত্রী রেশমী (২০) ও শ্যালিকা শাবনাজ ফেরদৌসি ওরফে আফিয়া (১৮) কে আটক করেছে পুলিশ। এর গত ৬ এপ্রিল পৌর শহরের টিকাপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় রহস্যজনক মৃত্যু হয় হাসান আলীর। ৭ এপ্রিল মৃত হাসান আলীর পিতা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে হাসানের ২য় স্ত্রী ও শ্যালিকা সহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ তাদের আটক করে।
আটক রেশমী ও আফিয়া পঞ্চগড় জেলার মাটিগাড়া (আটোয়ারী) গ্রামের মো: আলমের মেয়ে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, হাসান আলী ফায়ার সার্ভিসের একজন ফায়ারম্যান। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ছোট তিলাইন গ্রামে। সেখানে তার প্রথম স্ত্রী থাকেন। পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলা ফায়ার সার্ভিস অফিসে চাকুরীর সুবাদে হাসান আলী ভাড়া বাসা নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী সহ ঠাকুরগাঁওয়ে বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে কিছুদিন থেকে পড়াশোনার সুবাদে তার শ্যালিকা সাবনাজ ফেরদৌসি ওরফে আফিয়াও থাকতেন।
ঘটনার দিন দ্বিতীয় স্ত্রী রেশমি ও তার বোন আফিয়া হাসান আলীর দুলাভাই শামিম রেজাকে মোবাইলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে জানায় যে, দ্রুত টাকা না দিলে হাসান আলীকে মেরে ফেলা হবে। খবর পেয়ে তার পিতা আব্দুস সালাম টাকা জোগাড় করে ঠাকুরগাঁও শহরের টিকাপাড়ার ঐ ভাড়া বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান বাড়ীটি ফাঁকা।
আরও পড়ুন : স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার মামলায় কারাগারে সাংবাদিক রহিম শুভ
এসময় তিনি সেখানকার স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন তার ছেলেকে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তরিঘরি করে হাসপাতালে গিয়ে তিনি দেখতে পান হাসান আলীর মৃত্যু হয়েছে এবং তার মরদেহ মর্গে ফেলে রাখা হয়েছে।
হাসান আলীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভুয়া বিবাহের মাধ্যমে এবং ঘটনার দিন তাকে মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে নির্মমভাবে যন্ত্রণা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
৭ এপ্রিল, শুক্রবার হাসান আলীর মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের মানুষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এস.আই নির্মল কুমার রায় বলেন, তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে পারিবারিক কলহ লেগেছিলো। এ ঘটনায় হত্যা ও সহায়তার অপরাধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রেশমী ও শ্যালিকা আফিয়াকে আটক করে পুলিশ।
আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ওসি মো: কামাল হোসেন জানান, মামলার তদন্ত চলছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারন জানা যাবে এবং ঘটনার তদন্তে আর কে কে জড়িত আছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ডেস্ক/বিডি/মজিবর
কপি করলে খবর আছে