দেশের উত্তরের কৃষিতে সমৃদ্ধ জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলার কৃষি আশে পাশের জেলা গুলির তুলনায় বেশ উন্নত ও উৎপাদনের পরিমানও বেশি। এখানকার কৃষি পন্য বা ফসল উৎপাদনে পানির একটা বড় ভ’মিকা রয়েছে। তবে এবার কৃষিকাজে ব্যবহৃত এ পানি নিয়েই কৃষকদের মাঝে তৈরী হয়েছে উত্তেজনার।
এ জেলার কৃষিতে বড় একটা অবদান রেখে চলেছে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকুপ গলি। এবার সে সব নলকূপের সেচ নিয়ে অপারেটরদের বিরুদ্ধে নানা দূর্নিতীর অভিযোগ পাওয়া গেছে কৃষকদের থেকে।
বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জেলার গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ নেওয়ার জন্য কার্ডের টাকা ছাড়াও বাড়তি ভাড়ার টাকা দিতে হয় কৃষকদের। আর এই গভীর নলকূপের ভাড়ার টাকা প্রদান করতে হয় অপারেটর আক্তারুজ্জামান আক্তারকে এমন অভিযোগ করেন কৃষকেরা।
সদর উপজেলার ভূল্লী বড় বালিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত ১০৮ নং গভীর নলকূপের আওতায় থাকা প্রায় ৫০ জন কৃষক সেচ নিতে গিয়ে পড়েছে এমন ভোগান্তিতে । তারই প্রতিবাদ জানিয়ে কৃষকেরা অপারেটরের নামে লিখিত অভিযোগ করেন বরেন্দ্র নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে।
সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, বড় বালিয়া ইউনিয়নে ১০৮ নং গভীর নলকূপের দায়িত্বে থাকা অপারেটর আক্তারুজ্জামান বিগত ১০ বছর থেকে ওই এলাকার কৃষকের কাছে ডিপটিউবলের ভাড়া নিয়ে আসছে। প্রতি সেঁচ মৌসুমে একর প্রতি ২হাজার ৪শ টাকা ভাড়া দিতে হয় কৃষককে। ওই গভীর নলকূপের আওতায় প্রায় ৬০ একর জমি রয়েছে। বোরো বা আমন মৌসুমে কৃষক একর প্রতি ২হাজার ৪শ টাকা দিতে না পারলে তাকে সেচ সুবিধা দেওয়া হয় না। এ বছর ওই এলাকার ৫০ জন কৃষক একত্রিত হয়ে এ বিষয়ে বরেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে অভিযোগ করলে অপারেটর গভীর নলকূপে তালা মেরে দেয় এবং কৃষকে পানি না দেওয়ার হুমকীও দেয়।
শাহজাহান আলী , বিপ্লব, নজরুল ইসলাম সহ অভিযোগকারী কৃষকরা জানান, আমরা কার্ডের মাধ্যমে টাকা দিয়ে ডিপটিউবওয়েল থেকে পানি নেই। কার্ডে টাকা দিতে হয় আবার ভাড়াও দিতে হয়। নিজেকে ডিপটিউবওয়েল এর মালিক দাবি করে আক্তারুজ্জামান। বিঘা প্রতি ১২০০ টাকা না দিলে জমিতে তিনি সেচ দিবেন না। তিনি তালা মেরে রেখেছেন। বিগত সময়ে চাপে পরে আমরা টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি। আসলে তিনি কেন এই টাকা নেন বা নিয়ম আছে কি না সেটা আমরা জানতে চাই। গত ১ মাস যাবৎ আমরা পানি নিতে পারি নাই। কেন পানি দিবে না এমনটা জাইতে চাইলে উনি বলেন এই ডিপটিউবলের মালিক উনি নিজেই। জোর করে পানি নিতে চাইলে মামলা করেব সবার নামে। পানি দিতে না পারায় আমাদের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটার আমরা দ্রুত সমাধান চাই।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে গভীর নলকূপের অপারেটর আক্তারুজ্জামান বলেন, তারা যে অভিযোগটা করেছে তা মোটেও সত্য না। ডিপটিউবওয়েল করতে গিয়ে বরেন্দ্রকে আমি কয়েক ধাপে টাকা দিয়েছি। সেই টাকা তোলার জন্য এবং আমি আমার খরচের জন্য আংশিক কিছু টাকা নেই কৃষকের কাছে। কৃষকের কাছে বিঘা প্রতি ৮০০ বা ১০০০ টাকা চাই। কোন ধরনের জোরপূর্বক টাকা নেওয়া হয়না। তারা যা দেয় তা নেওয়া হয়। অনেকেই আবার টাকা দেয় না।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প ( বিএমডিএ) এর ঠাকুরগাঁও রিজিয়নের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ১০৮ নাম্বার ডিপটিউবওয়েল (গভীর নলকূপ) এর অপারেটরের বিরুদ্ধে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ সাপেক্ষে আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। এরপরেও যদি ঐ অপারেটর অনিয়ম করতে থাকে তাহলে আমরা তাকে বাতিল করব।
কপি করলে খবর আছে