ঠাকুরগাঁওয়ে সুদের টাকা না পেয়ে এক কলেজ ছাত্রকে তুলে নিয়ে স্কুল ঘরে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।পরে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে।এদিকে এ ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করার সময় পুলিশের উপস্থিতিতে বিপ্লব নামে এক ইউপি সদস্য সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেয় ও তাকে হেনস্থা করে।
ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আখানগর ইউনিয়নের ঝাড়গাঁও গুঞ্জুরাহাট নামক এলাকায়।
নির্যাতনের শিকার আবু নাইম (১৮) ঝাড়গাঁও গ্রামের তহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আবুল হোসেন কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। নাইমকে তুলে নিয়ে বিদ্যালয়ের কক্ষে আটক রেখে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার দেলোয়ার হোসেন ও তার ছেলে মোহাম্মদ মুন্নার বিরেুদ্ধে।
এ ঘটনায় আজ বুধবার রুহিয়া থানায় তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন নাইমের বাবা। এর আগে সোমবার রাত ১০টার দিকে আখানগর ইউনিয়নের গুঞ্জুরাহাট থেকে নাইমকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।
অপরদিকে সাংবাদিককের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া ও হেনস্থা করায় দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রতিনিধি ও ঠাকুরগাঁও অনলাইন প্রেসক্লাবের সদস্য আপেল মাহমুদ রুহিয়া থানায় একটি জিডি করেন এবং ন্যায় বিচারের আশায় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
জানা যায়, নাইমকে নির্যাতনের বিষয়টি মঙ্গলবার দুপুরে আখানগর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. বিপ্লব নাইমের বাবাকে জানালে তিনি ৯৯৯-এ কল দেন। পরে পুলিশ গিয়ে নাইমকে উদ্ধার করে।
নাইম জানান, সোমবার রাতে গুঞ্জরহাট এলাকা থেকে দেলোয়ার ও তার ছেলে মুন্নাসহ আরো চার পাঁচজন তাকে জোড়পূর্বক নিয়ে যায়। পরে তারা স্থানীয় ঝড়গাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে রেখে সারারাত মারধর করে।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ মুন্না জানান, বছর খানেক আগে তার বাবা নাইমকে ৪৫ হাজার টাকা সুদের উপর ঋণ দিয়েছিলেন। সেই টাকা নাইম পরিশোধ করছিলো না। কয়েক দফা তাগাদা দেওয়ার পরও কোনো সমাধান না আসায় টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়েছিলো। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্যকে জানানো হয়। তবে নাইমকে মারধর করার অভিযোগটি অস্বীকার করেন তিনি।
আখানগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রোমান বাদশা বলেন, কাউকে তুলে নিয়ে টাকা আদায় আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। নাইমকে তুলে নিয়ে আটক রাখার বিষয়টি তিনি অবগত নন।
রুহিয়া থানার ওসি সোহেল রানা জানান, এ ঘটনায় বুধবার তহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ মুন্না ও রাজিউর রহমানকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া সাংবাদিককে হেনস্থা করার বিষয়ে ওই ইউনিয়নের ৫নং ইউপি সদস্য মোঃ বিপ্লবের বিরুদ্ধে সাংবাদিক আপেল নামে একজন লিখিত অভিযোগ দাখিল করছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া ও হেনস্থার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঠাকুরগাঁও অনলাইন প্রেসক্লাব। ২০ জুলাই এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি বিধান চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম রঞ্জু এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।সেই সাথে ইউপি সদস্য বিপ্লবকে দ্রুত আইনের আওতায় নেওয়া সহ পুলিশের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ থাকায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরও শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।
বিডি/ডেস্ক
কপি করলে খবর আছে