আশানুরূপ ফলন ও দাম না পাওয়ায় ঠাকুরগাঁও জেলায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে আদি ফসল কাউন, যব ও ঢেমসি। এক সময় ব্যাপক ভাবে আবাদ হয়েছিল এ ঠাকুরগাঁও জেলায় । এখন আর ঐ সব ফসল চাষের প্রতি কৃষকের আগ্রহ নেই। হাতে গোনা কয়েকজন কৃষক কাউন, যবের চাষ করছেন। তবে ঢেমসির আবাদ বিলুপ্ত প্রায়।
কৃষি বিভাগ জানায়, কাউন জৈষ্ঠ্য মাসে উঠে। যব উঠে গমের মৌসুমে। আর শীতের শেষে চাষ হয় ঢেমসির। সব ধরণের জমিতে চাষ হয় এসব ফসল। এ বছর জেলায় ২ হেক্টর জমিতে কাউনের আবাদ হয়েছে।
জানা যায়, জেলার হাট-বাজার গুলোতে এখনও প্রতিকেজি কাউনের চাল বিক্রি হচ্ছে ১শ থেকে ১২০ টাকা দরে। ভোজন বিলাসীরা পায়েস, পিঠা ও নাড়ু তৈরির জন্য কিনছেন এই দানাদার খাদ্যশস্য। যবের ছাতু বিক্রি হচ্ছে ২শ টাকা কেজি দরে। এর ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যায়।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের সেন্টার হাট গ্রামের কৃষক সোহরাব হোসেন জানান, কাউন, যব ও ঢেমসির আবাদ করেছিলেন তিনি। ঐ সব আদি ফসলের আবাদ থেকে তিনি সরে এসেছেন। এখন তিনি ধান, পাট, আখ, ভুট্টা, গম ও সবজির চাষ করছেন। সময় মত আখের মুল্য না পাওয়ায় আখ চাষও তিনি ছেড়ে দিয়েছেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের মুজাবর্নি গ্রামের কৃষক ফজলে রাব্বি ফজলু জানান, কৃষিতে এখন খরচ বেশি। একদিকে বৈরী আবহাওয়া, অন্যদিকে শ্রমিকের মজুরি বেশি । তার উপর কৃষি উপকরণের মুল্য দিন দিন বাড়ছে। তাই কৃষক লাভজনক ফসল চাষে ঝুকছেন বেশি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, কৃষির আধুনিকীকরণ ও উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের ফলে লাভজনক শস্য উৎপাদন করছে কৃষকেরা । তবে কাউন, যব ও ঢেমসি চাষের গুরুত্ব স্বীকার করে বলেন, কাউন চাষে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। আদি ফসল গুলো খরাসহিঞ্চু, রোগবালাই ও কীটপতঙ্গমুক্ত। কাউনের চালের ভাত, পায়েস, পিঠা ও নাড়ু খেতে সু-স্বাদু। যবের ছাতু ও ঢেমসির চালের ভাত-খৈ পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ। এ জাতীয় ফসলের বৈচিত্র ধরে রাখতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে বলে জানান তিনি।
বিডি/হাসান
কপি করলে খবর আছে