ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ৪৭নং জয়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে ফাটল ও জরাজীর্ণ হওয়ায় শ্রেণিকক্ষ সংকটে খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। এ কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
হরিপুর উপজেলায় বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন হলেও ৬নং ভাতুরিয়া ইউনিয়নের ৪৭নং টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবহেলায় আর অব্যবস্থাপনায় রয়ে গেছে। ফলে দিনের পর দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়টি।
জানা গেছে, জয়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি ফাটল জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের কখনো খোলা মাঠে, কখনো গাছ তলায় ক্লাস নেয়া হচ্ছে। বিদ্যালয় সূত্র জানায়, ১৯৮৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর জন্য ১৯৯৩ সালে একটি ভবন নির্মিত হয়। এরপর বিদ্যালয়টিতে ৩৪ বছর ধরে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রখর রোদে সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে খোলা আকাশের নিচে ধুলাবালুর মধ্যে ক্লাস করে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বৃষ্টির দিনে বিদ্যালয়ে পাঠদান চালু রাখলে আরও দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টির দিনে ক্লাস করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থীর বই-খাতা ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। বৃষ্টিতে স্কুলড্রেস ভিজে ঠান্ডা, কাশি, নিউমনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় অনেকে। প্রথম শ্রেণির ছাত্র তাসনিমুল ও তরিকুল বলেন, বাইরে ক্লাস করার সময় অনেক শব্দ হয়। রোদের মধ্যে ক্লাস করতে হয়। পড়ায় মন বসে না।
স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী হিরা মনির বাবা হামিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে, মেয়েকে স্কুলে পাঠানোর পর বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত খুবই চিন্তিত থাকতে হয়। তাই আমি সরকারকে বিনীত অনুরোধ করছি বিদ্যালয়টিকে দ্রুত সংস্কার করার।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজালাল বলেন, বিদ্যালয়ে যোগদানের প্রায় ৩৪ বছর অতিক্রম হয়েছে। ভবনের নাজুক অবস্থা দেখে উপজেলা শিক্ষা বিভাগে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নিয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে আবেদন করেছি কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। এখন না হয় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বর্ষাকালে ওদের নিয়ে কোথায় যাব আমরা।
তিনি আরও বলেন ২০১৬ সালে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন কিন্তু তা আজ পর্যন্ত মেরামত বা সংস্কার করার হয়নি। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, পরিত্যক্ত ভবনটি অপসারণ করে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এদিকে দেখভাল নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আজিজার রহমান বলেন, ৪৭নং টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আসলেই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিদ্যালয়টি সংস্কারের ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আশা করি দ্রুত এর সমাধান হবে।
বিডি/ডেস্ক
কপি করলে খবর আছে