মধ্য প্রাচ্যের ফল ‘শাম্মাম’ চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মন্ডল

লেখক: নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২ years ago

দেশের উত্তরের কৃষিতে স্বনির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলার আবহাওয়া অন্য জেলা গুলির তুলনায় আলাদা বলে প্রায় সব ধরনের শষ্য, সবজি ও ফলের আবাদ হয় এখানে। এখানকার উৎপাদিত খাদ্য শষ্য ও সবজি সহ নানা রকম ফলের গুণগত মানও যথেষ্ট ভালো। এবার মধ্য প্রাচ্যের ফল শাম্মাম চাষে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মন্ডল ইসলাম।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনপ্রিয় একটি ফলের নাম ‘শাম্মাম’। অনেকেই এই ফলটিকে ‘রকমেলন’ নামেও চেনেন। ইউটিউবে দেখে এই শাম্মাম ফলটি বাংলাদেশের মাটিতে চাষ করে সফল হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মন্ডল ইসলাম।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মন্ডল ইসলাম। পীরগঞ্জের তেঁতুলতলা এলাকায় ভাতারমারি ফার্মের পশ্চিম পাশে ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ‘শাম্মাম’ ফলটির চাষ শুরু করেন তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, ঠাকুরগাঁও জেলায় এবার দ্বিতীয় বারের মতো ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে। এর আগে গত বছর সদর উপজেলার রাহুল রায় নামে এক কৃষক সর্ব প্রথম চাষ শুরু করেন। এবার জেলায় মোট ২ একর জমিতে ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন : বালিয়াডাঙ্গীতে মোবাইল বিক্রির আঁড়ালে চলত ইয়াবা ব্যবসা; অতপর

‘শাম্মাম’ নামের এই ফলটির চাষ সচরাচর ঠাকুরগাঁও জেলায় করতে দেখা যায় না। এই ফলটি চাষ করতে খরচ একটু বেশি হয়। মাটির উপরে মালচিং বিছিয়ে ‘শাম্মাম’ ফলের চারা রোপণ করা হয়। আর ছিদ্রকরা মালচিং এর ফাকা দিয়ে গজিয়ে উঠে ‘শাম্মাম’ ফলের গাছ। চারা রোপণের মাত্র ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ‘রক মেলন বা শাম্মাম’ ফল কর্তন (হারভেস্ট) করে বাজারে নেওয়া যায়।

কৃষক মন্ডল ইসলাম জানান, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে শাম্মাম চাষ শুরু করি। এটির চাহিদা ও বাজার মূল্য ভালো। মূলত লাভের আশায় এই ফলটি চাষ শুরু করেছি। তিন বিঘা জমিতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে ৫ লাখ টাকা আয়ের আশা করছি।’
তিনি আরও জানান, ‘আগে ঢাকার কারওয়ান বাজারে নিয়ে ‘শাম্মাম’ বিক্রি করেছি। এখন ক্ষেত থেকেই পাইকার এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।’

মন্ডল ইসলামের ক্ষেত থেকে ‘শাম্মাম’ কিনতে আসা পাইকার মইদুল বলেন, এবছর প্রথমবার আমি শাম্মাম ফলের ব্যবসায় যুক্ত হয়েছি। এখনও স্থানীয়ভাবে এই ফলের বাজার তৈরি হয়নি। তবে নতুন এই ফলটি ঢাকার বাজারে ব্যপক চাহিদা রয়েছে। শাম্মাম বা রক মেলন ফলটি সর্বনিম্ন ৫০০ গ্রাম থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। ফলটি প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হয় বাজারে। আমি ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে ক্ষেত থেকে এই ফলটি কিনেছি।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, কৃষকরা এই ফলটির চাষ সম্প্রসারণ করলে তারা যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। তেমন অন্যদিকে পুষ্টির চাহিদা পুরনে ও বাজারে নতুন ফলের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। আমাদের দেশে এটি নতুন আসলেও সুপার শপ গুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সদর উপজেলার এক কৃষক এর আগেও ‘শাম্মাম’ চাষ করে ভালো মূল্য ও সাড়া পেয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের আবহাওয়া ‘শাম্মাম’ চাষে উপযোগী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের এই বিষয়ে যথাযথ সহায়তা প্রদান করা হবে।

ডেস্ক/বিডি/বাপ্পী

  • মধ্য প্রাচ্যের ফল ‘শাম্মাম’
  •    

    কপি করলে খবর আছে