রাণীশংকৈল ইউএনও’র নামে চাঁদা দাবি, থানায় জিডি

লেখক: আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও
প্রকাশ: ৩ years ago

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরিচয়ে একাধিক মিষ্টান্ন বিক্রেতার কাছে ৩০/৪০ টাকা করে চাঁদা দাবি করা হয়েছে ।

ঘটনাটি প্রতারক চক্রের অপকৌশল নিশ্চিত হওয়ার পর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ইউপি সদস্য দবিরুল ইসলাম।

অপরদিকে বিষয়টি জানার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সতর্কতামূলক পোস্ট দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ।

ইউএনও’র পরিচয়ে মিষ্টির দোকানে চাঁদা দাবি করার ৪ দিন পর ফের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছে চাঁদা দাবির ঘটনা ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

উপজেলার মীরডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারজানা আক্তার জানান, বুধবার (৩০ মার্চ) আমাকে ও পার্শ্ববর্তী টেকিয়া মহেষপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষককের মোবাইলে অজ্ঞাত মোবাইল থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরিচয়ে বলেন, আমি ইউএনও বলছি। আগামীকাল আপনারা একটি করে ল্যাপটপ পাবেন। সেটি বাসায় ও স্কুলে ব্যবহার করতে পারবেন। আমার ব্যক্তিগত নাম্বারে পাঁচ হাজার টাকা বিকাশ করে দেন।

একইভাবে সহোদর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফোন দেয় প্রতারকরা। কিন্তু চতুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কেউ টাকা দেননি।

অপরদিকে, গত ২৬ মার্চ নেকমরদ ইউনিয়নের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরিচয়ে ৩০-৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।

থানায় জিডির সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নে একাধিক মিষ্টির দোকান রয়েছে। গত ২৬ মার্চ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নেকমরদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য দবিরুল ইসলাম কয়েকটি মিষ্টির দোকানে গিয়ে ইউএনও কথা বলবেন বলে মুঠোফোন তাঁদের কাছে দেন। এ সময় ইউএনও পরিচয় দিয়ে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বর জানাতে বলা হয়।

ইউএনও পরিচয়ে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি ফোন করে বলেন, ‘অভিযানে এলে আপনাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা হবে। আপনি যদি জরিমানা খেতে না চান, তাহলে ৪০ হাজার টাকা বিকাশ করে পাঠিয়ে দেন।’

ওই ব্যবসায়ী নম্বর দিলে পরবর্তী সময়ে ওই নম্বরে  ইউএনও পরিচয়ে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি ফোন করে বলেন, অভিযানে এলে আপনাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা হবে। আপনি যদি জরিমানা খেতে না চান, তাহলে ৪০ হাজার টাকা বিকাশ করে পাঠিয়ে দেন।’ এরপর একই নম্বর থেকে একাধিকবার ফোন দিয়ে টাকা পাঠানোর জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় ওই রাতেই ইউপি সদস্য দবিরুল ইসলাম বাদী হয়ে অপরিচিত মোবাইল নম্বর ০১৯২৩-৮৫১৭০২ উল্লেখ করে রাণীশংকৈল থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন।

এ বিষয়ে থানা পরিদর্শক (ওসি) এসএম জাহিদ ইকবাল মুঠোফোনে জানান, মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের কাজ চলছে। সিডিআর হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন, মিষ্টির দোকানের বিষয়টি এবং শিক্ষকদের বিষয়ে থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে জানানো হয়েছে। ভুয়া ইউএনও সেজে যারা চাঁদা দাবি করেছে, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তবে দূষ্কৃতকারীরা সবাই বরিশাল, নেত্রকোনা ও দক্ষিণবঙ্গের লোক। ছেলে মানুুষের নামে সিম তোলা হয়েছে এবং সেই নম্বরে ইমুতে মহিলার ছবি। সবকিছু উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

ডেস্ক/বিডি

  • মোবাইলে ইউএনও পরিচয়ে চাঁদা দাবি
  •    

    কপি করলে খবর আছে