গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আমাদের সামনে কঠিন সমস্যা ‘শ্রীলঙ্কাকে দেখে আমাদের শেখা উচিত। ১০ দিন আগেও পৃথিবীর কোনো বিশেষজ্ঞ বলেননি যে শ্রীলঙ্কায় আগুন জ্বলবে। মানুষের ধৈর্যের সীমা আছে। সে ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করেছে।
সোমবার মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরিচালিত ফারাক্কা লং মার্চের ৪৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে রাজশাহীতে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে দুই কোটির বেশি পরিবার অর্ধাহারে আছে। প্যান্ট-শার্ট পরা লোকেরা টিসিবির ট্রাকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। এ রকম পরিস্থিতিতে মানুষ দিনকে দিন বলতে পারে না। দিনকে তারা রাত হিসেবে দেখে। কিন্তু কত সহজে এ সমস্যার সমাধান করা যেত। সুষ্ঠু নির্বাচন, সুশাসন এবং দুই কোটি পরিবারকে সামরিক দরে রেশন দেন। এ সবই করা সম্ভব। কিন্তু তা না। আপনারা করছেন অপচয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছেন, কিন্তু এখনো কুইক রেন্টাল কেন রেখেছেন? এসব রাগ-ক্ষোভ কমানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দরকার, যারা মানুষের রাগ কমাবে। নির্বাচন হয়ে যাবে। নির্বাচনে যে জিতবে সে আসবে, তাতে কোনো ক্ষোভ থাকবে না। ‘
এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘অনেকে বলে শ্রীলঙ্কা হবে না। ক্যামনে জানেন? শ্রীলঙ্কা তো শান্তির দেশ। তাদের জাতীয় বীর নাই হয়ে গেছে। সুতরাং সাধু সাবধান। জনগণ ভুলে যাবে না। জনগণের পেটে ক্ষুধার জ্বালা। বাচ্চা যদি দুধ না পায় মা সহ্য করতে পারে না, আত্মহত্যা করে। অথবা শিশুর গলা টিপে ধরে। ‘
তিনি বলেন, ‘শিক্ষকরা সাহসী হন। । কল্যাণকর রাষ্ট্রের জন্য সবাইকে একত্র হয়ে সংগ্রাম করতে হবে। সেই সংগ্রামে আপনাদের সাথে আছি। যতই বয়স হোক, হুইলচেয়ারে বসে থাকলেও আমি আপনাদের সাথে থাকব। ‘
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আজ উল্টো বুঝবেন না। ছেড়ে দেন একটা আন্তর্জাতিক মানের সরকারের হাতে। সুষ্ঠু নির্বাচন করেন। নির্বাচনে যারা আসবে তারা থাকুক। পৃথিবীর অতীত ইতিহাস থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা গ্রহণ করুন। ইতিহাসে ম্যান্ডেলার কথা ধরেন। নির্বাচিত হলেন, ক্ষমতা নিলেন না। কারণ তিনি জানতেন এটাকে সামাল দেওয়া যাবে না। স্থিতি দরকার। মাসের পর মাস আলোচনা করেছেন। ‘
রাজশাহী নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চে সোমবার বিকেলে ফারাক্কা লং মার্চ উদযাপন কমিটি এর আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী।
এতে বক্তব্য রাখেন মওলানা ভাসানীর দৌহিত্র আজাদ খান ভাসানী, পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম. ইনামূল হক, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের জেলার সভাপতি এনামুল হক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহীর সাবেক সভাপতি ডা. ওয়াসিম হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর এনামুল হক, ড. জি এম শফিউর রহমান প্রমুখ।
বিডি/ডেস্ক
কপি করলে খবর আছে