দেশে গুম খুন ও সকল হত্যার দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার দাবি করে বিএনপির মহাসচির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পথ হারিয়ে এখন নোংড়া খেলায় মেতে উঠেছেন হাসিনা। ভারতের দিল্লিতে বসে নতুন চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন। সংখ্যালঘু সম্পদায়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নতুন ষড়যন্ত্র করছেন তিনি। যখন তারা সমস্ত খেলায় পরাজিত হবে, নির্বাচনে হেরে যাবে, তখন তারা বলবে হিন্দু ভাইদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে।
তিনি মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ডিগ্রী কলেজ মাঠে “ঐক্য ও সম্প্রীতি সমাবেশে” প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান একটি গাছে ফুলের মত ফুটে রয়েছে। আমাদের এ সম্পর্কের মধ্যে তারা ফাটল ধরাতে চায়। ধর্মীয় অপপ্রচার ছড়িয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করতে চায়। আমাদের কথা খুব পরিস্কার। রাজনৈতিক যথন কোন পট পরিবর্তন হয়, তখন একটা গোলযোগ হয়। সেটা কখনও ধর্মীয় নয়, সেটা রাজনৈতিক। আমরা সব সময় হিন্দু ভাইদের ভোট পেয়েছি, তাহলে আমরা তাদের কেন আলাদা ভাববো।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমার খুব খারাপ লেগেছে, যখন দেখেছি বিজয় স্মরনীর সামনে শেখ মুজিব এর যে মূর্তিটা ছিল তা অসংখ্য মানুষ দড়ি দিয়ে বেধে টেনে হিচড়ে ফেলে দিচ্ছে। তিনি তো আমাদের জাতীয় নেতা ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বিরাট ভ’মিকা ছিল। সে লোকটাকে হাসিনা কতটা ছোট করে ফেলেছে। আপনি প্রতিটি স্তরে দুর্নিতি করলেন , দেশের মানুষকে কুক্ষিগত করে রাখলেন আর সব ঢাকতে দেশের সব রাস্তার মোড়ে মোড়ে বাবার একটা করে মুন্ডু বানিয়ে রেখে দিয়েছেন। এসব মুন্ডু না বানিয়ে বাবার আদর্শকে ধারন করা আপনার উচিত ছিল। আহংকার সোহ্য করেনা মানুষ। এ অহংকারই আপনার পতন হয়ে দাড়িয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছরে বিএনপির ৭’শ নেতা গুম, সহ¯্রাধিক নেতাকে গুলি করে হত্যা এবং ৬০ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে । জনগণের উপর অন্যায় অত্যাচার আর দেশের সম্পদ লুটপাটকারী এই দলের নেতাদের এখন পালাবার পথ হারিয়ে ফেলেছে ।
ছাত্রদের আন্দোলন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অসংখ্য ছেলেরা যখন মারা গেল তখন আর মা বাবা, অবিভাবকরা ঘরে থাকতে পারেনি। সবাই বেরিয়ে এসেছে রাস্তায়। সেদিন বৃষ্টির মত গুলি করেছে পুলিশ। তারপরও লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তা ছাড়েনি। রংপুরের আবু সাঈদ , আর আন্দোলনরত ছাত্রদের পানি দিয়ে দৌড়ে বেড়ানো মুগ্ধ। পয়েন্ট ব্লাঙ্ক থেকে তাদের কিভাবে গুলি করে মেরেছে। হাসিনার এসব অন্যায়ের কারনেই তাকে শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। সে আল্লাকে অবিশ^াস করে জনগণকে নির্যাতন করেছে। তার অন্যায়ের প্রতিবাদেই শেষ পর্যন্ত লাখো ছাত্র জনতা রাস্তায় নয় যেনো আল্লাহর তরফ থেকে অবিশ্বাস্য কোন ঘটনা ঘটেছে। নেমেছে হাসিনার বিরুদ্ধে। জয় হয়েছে ছাত্র জনতার।
মির্জা ফখরুল সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হিন্দু-মুসলিম এক হয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। যদি কেউ সংখ্যালঘু পরিবারের প্রতি অন্যায় অবিচার করে তাদের আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়াও কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
সদর উপজেলা বিএনপির আয়োজনে শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি মো: শরিফুল ইসলাম শরিফ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, মহিলা দলের সভাপতি ফোরাতুন নাহার প্যারিস সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এর পর সন্ধায় তিনি রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঐক্য ও সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। পরে আন্দোলনে নিহত ৪ নেতার পরিবারের সাথে সাক্ষাত করেন মির্জা ফখরুল।
কপি করলে খবর আছে