একেবারে অপ্রত্যাশিত। এমন একটি ফল হবে কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করেনি। অথচ, ভাবনারও অতীত সে ঘটনা ঘটলো মঙ্গলবার দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামে। সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরে গেলো লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।
এদিকে বিশ্বকাপ উন্মাদনায় মত্ত ঠাকুরগাঁওয়ের ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে ঘটেছে এক ব্যাতিক্রমী ঘটনা। বিশ্বকাপে প্রিয় দল আর্জেন্টিনা প্রথম খেলায় সৌদি আরবের কাছে হেরে যাওয়ার দূঃখে ফুটবলপ্রেমীদের মিষ্টিমুখ করিয়েছে মোঃ আরিফ নামে এক আর্জেন্টিনার ভক্ত। বিষয়টি শহরে ব্যাপক আলোচনার ঝড় তুলেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও শহরের স্বর্ণকার পট্টিতে। আরিফ পেশায় একজন স্বর্ণ কারিগর।
মিষ্টি খেতে খেতে জামাল হোসেন জানান, প্রিয় টিম হেরে গিয়ে মিষ্টিমুখ করানোর ঘটনা মনে হয় এটাই প্রথম দেখলাম। আসলে বিশ্বকাপের এ খেলায় ভক্তরা একটু বেশিই আবেগ প্রবন হয়ে পড়ে। সামনের খেলাগুলোতে যাতে আর্জেন্টিনা ভালো খেলতে পারে এ দোয়া করি।
এসময় সুমন রায়, হালিম, রঞ্জিত দত্ত, হোসেন, বিধান শর্মাসহ উপস্থিত স্বর্ণ কারিগর ও ব্যবসায়ীরা বলেন, আরিফ প্রিয় ফুটবল টিমের পরাজয়ে মর্মাহত হয়ে সকলকে মিষ্টিমুখ করালো এটা দূঃখের বহিঃপ্রকাশ, বিজয়ী হওয়ার পর যদি মিষ্টিমুখ করাতো তাহলে সকলেই আনন্দ পেতাম।
আর্জেন্টিনার হেরে যাওয়ায় মিষ্টি বিতরণকারি আরিফ জানান, খুব আশা নিয়ে খেলা উপভোগ করছিলাম।কিন্তু প্রিয় দলের হেরে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না, তাই কষ্ট পেয়েও সকলকে মিষ্টি খাওয়ালাম।বিশ্বাস রাখি সামনের খেলাগুলোতে প্রিয় টিম আর্জেন্টিনা স্ব-ভুমিকায় ফিরে আসবে এবং কোটি কোটি ভক্ত হৃদয়ের স্পন্দন জাগিয়ে তুলবে।
প্রসঙ্গত, প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনাকে নিজেদের রূপেই দেখা গিয়েছিল; কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে মেসিদের দেখা গেলো সৌদি আরবের আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যাস্ত। ৪৮-৫৩ এই মাত্র ৫ মিনিটের দুটি আক্রমণেই তছনছ হয়ে যায় আর্জেন্টিনার ডিফেন্স। এই দুটি আক্রমণ থেকেই ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা অঘটনের দুটি গোল হজম করলো লা আলবিসেলেস্তারা।
তবে, দ্বিতীয়ার্ধে সৌদি আরবের খেলা সবার মন জয় করে নিয়েছে। মনে হচ্ছিল সৌদি আরব আর্জেন্টাইনদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং আর্জেন্টিনা হয়ে গেছে সৌদি আরব।
তবুও শেষ দিকে প্রায় ১০ মিনিট এবং অতিরিক্ত (ইনজুরি টাইম) আরও ১০ মিনিট এককভাবে খেলেছে আর্জেন্টিনা। চেষ্টা ছিল একটি গোল অন্তত বের করে আনা। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের। সৌদি আরবের ডিফেন্স এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, মেসিদের একের পর এক চেষ্টা বিফলে চলে যায়। এমনকি শেষ মুহূর্তে (ইনজুরি টাইমে) আর্জেন্টিনার নিশ্চিত একটি গোল লাইনে দাঁড়িয়ে হেড করে ফিরিয়ে দেন সৌদির এক ডিফেন্ডার।
তবে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন মোহাম্মদ আল ওয়েইসিস। অসাধারণ গোলকিপিং করেছেন তিনি। আর্জেন্টিনার অনেকগুলো নিশ্চিত গোলের সুযোগ তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। উল্টো আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে দিয়েছেন ব্যর্থতার পরিচয়।
প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তাদের ডিফেন্সের মারাত্মক ভুলে গোল হজম করে বসে লিওনেল মেসির দল। ৪৮তম মিনিটে বাঁ-পায়ের দুর্দান্ত এক শটে লা আলবিসেলেস্তেদের জালে বল জড়ান সৌদি আরবের সালেহ আল সেহরি।
৫৩তম মিনিটে আবারও গোল। এবার সৌদি আরবের ১০ নম্বর জার্সিধারী খেলোয়াড় সালেম আল দাওসারি রদ্রিগো ডি পল এবং নিকোলাস ওতামেন্দিকে কাটিয়ে ডান পায়ের দুর্দান্ত এক শটে বল জড়ান আর্জেন্টিনার জালে।
বিডি/ডেস্ক
কপি করলে খবর আছে