জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ; জবর দখলের অভিযোগ

লেখক: নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১ বছর আগে

জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ চলে আসছিলো। দ্বন্দ নিরসনের আগেই প্রতিপক্ষরা দখলে থাকা জমির সীমানা পিলার সহ ঘেড়া-বেড়া উচ্ছেদ করে জমিটি জবর দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, জমি জবর দখল করার পর প্রতিপক্ষরা জমির প্রকৃত মালিকদের হুমকি-ধামকি সহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন মর্মে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বায়নামাসুত্রে জমির প্রকৃত মালিক দাবিকারী হাসনাত কবীর জিকো নামে এক ব্যক্তি।

ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলাধীন রুহিয়া থানার মধুপুর নামক এলাকায়।

ভুক্তভোগি জিকো’র অভিযোগ তার পূর্বসূরীরা ওই এলাকার মধুপুর মৌজায় সিএস-৫০১ ও এসএ-৫৩৩ খতিয়ানের রেকর্ডীয়দের নিকট হতে ২০০৩৩ দলিল মূলে ১৬৬০ দাগের ৩১শতক সহ মোট ৬৩ শতক জমি কবলা খরিদ করেন। তার দাদা আসিরউদ্দিন মারা গেলে উত্তরাধিকার সুত্রে তার ৫ ছেলে ও ৩ বোন সেই জমির মালিকানা হন। সে মোতাবেক তারা জমিটি ভোগ দখল করে আসছিলেন।

সম্প্রতি তার চাচা ও ফুপুদের কাছ থেকে তিনি জমিটি বায়নামা রেজিস্ট্রি করেন। বায়নামা রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হলে তিনি জমিতে আমিন নিয়ে গিয়ে সীমানা পিলার বসিয়ে ঘেড়াবেড়া দেন। কিন্তু ক্ষমতার জোর দেখিয়ে রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও মধুপুর এলাকার বাসিন্দা মো: ইউসুফ আলী, ঘনিমহেষপুর এলাকার মৃত: ফজলুর রহমানের ছেলেদ্বয় দবিরুল ইসলাম ও মোকবুল হোসেন, কানিকশালগাঁও এলাকার মৃত: সিরাবউদ্দিনের ছেলে হামিদুল ইসলাম ও হামিদুল ইসলামের ছেলে মো: সজন জমিটি তাদের দাবি করে রাতের আঁধারে সীমানা পিলার সহ জমির ঘেড়াবেড়া ভেঙ্গে ফেলে এবং জবর দখলের চেষ্টা করে। পরে গত ৯ মার্চ পূণরায় ওই জমিতে সীমানা পিলার বসাতে গেলে তারা বাঁধা দেন এবং মারপিটের চেষ্টা করেন।

এসময় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করে এবং বিষয়টি সমাধানে থানায় বসতে বলে। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলে ইউসুফ মেম্বার সহ জমির অন্যান্য দাবিকারিরা তাকে (হাসনাত কবীর জিকোকে) ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা রকম হুমকি-ধামকি প্রদান করে আসছেন বলে জানান তিনি। অনাকাংখিত দূর্ঘটনা এড়াতে ও প্রাণহানির শঙ্কায় বিষয়টি থানায় লিখিত আকারে অভিযোগ করেছেন বলেও জানান তিনি।

এ ঘটনায় তিনি জমি জবর দখলকারি ও হুমকিদাতাদের বিচারের জোর দাবি জানান। এদিকে এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে ইউপি সদস্য ইউসুফ আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জমির মালিক মারা যাওয়ার সময় তাদের বাবা-মা জীবিত থাকায় জমিটি উর্ধগামী হলে উর্ধগামী হওয়া সম্পত্তি জমির অন্যান্য শরিকদের নিকট হতে তারা ২০১০ সালে খরিদ করেন এবং সে মোতাবেক জমিটির আংশিক দখলে রেখে সেখানে একটি গোডাউন করেছেন তিনি। তার দাবি তিনি নিয়ম মোতাবেক জমি ক্রয় করে দখল করেছেন, কারও জমি তিনি জবর দখল করেননি।

তবে তার এ দাবি অযৌক্তিক বলে জানান অভিযোগকারি হাসনাত কবীর জিকো। এ বিষয়ে তিনি বলেন, তার দাদা আসিরউদ্দিন যখন মারা যান তার আগেই আসিরউদ্দিনের পিতা সফর উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। কাজেই জমি উর্ধগামী হওয়ার কোন সুযোগ নেই, বরং তারা ভূয়া দলিল করে গায়ের জোরে তা বাস্তবায়ন করতে চান।

এ বিষয়ে রুহিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: সোহেল রানা জানান, গত ৯ মার্চ ইং তারিখে মধুপুর গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধে মারপিটের ঘটনার খবর পেয়ে থানা থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। দুই পক্ষকেই আইন-শৃংখলা ভঙ্গ না করার পরামর্শ দিয়ে সমস্যা নিরসনে থানায় বসার কথা বলা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, খুব শীঘ্রই দুই পক্ষের সম্মতিতে সময় নির্ধারন করে থানায় বসা হবে। আশাকরি সমস্যা সমাধান হবে, আর যদি কোন কারণে তা না হয়, তাহলে উভয় পক্ষকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বিডি/ডেস্ক

  • জমি জবর দখল
  •    

    কপি করলে খবর আছে