ঠাকুরগাঁওয়ে কর্মচারী-ক্রেতার মারধরের ঘটনায় কারাগারে দোকান মালিক ও ছেলে

লেখক: নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১ বছর আগে

স্বর্ণক্রেতাকে মারধরের ঘটনায় ঠাকুরগাঁও হ্যাপী জুয়েলার্স এর মালিক খোকন কুমার রায় ও তার ছেলে দন্ত চিকিৎসক চিরন্তন কুমার রায় শুভকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এর বিচারক নিত্যানন্দ সরকার এ আদেশ দিয়ে পরবর্তী শুনানি সোমবার ধার্য করেন। মামলার অন্য আসামীরা হলো-কর্মচারী খুশি (৩৫), মানিক (৩৫), রতন (৩৮)। 

মামলার সূত্রে জানা যায়, শহরের রোড ইসলামনগর খানকা শরীফ এলাকার তারিফ হোসেনের স্ত্রী ইফরাত বারী রুনা ২০১৮ সালে শহরের স্বর্ণকার পট্টি এলাকার হ্যাপী জুয়েলার্সে একটি সিতাহার তৈরি করেন। ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি হ্যাপী জুয়েলার্সে ২২ কেরেট গিনি সোনা ১ ভরি ১০আনা ৩ রতি জমা দিয়ে ৯ আনা ৩ রতি মুল্য মজুরীসহ ৩০ হাজার ৩১৫ টাকা, ২ ভরি ৪ আনা সোনা দিয়ে একটি সিতাহার তৈরি করতে দেয় শহরের রোড ইসলামনগর খানকা শরীফ এলাকার তারিফ হোসেনের স্ত্রী ইফরাত বারী রুনা। সিতাহারটি কয়েক মাস পর নগদ টাকা দিয়ে তারা নেন।

এরমধ্যে গত শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে তিনি উক্ত সিতাহারটি হ্যাপী জুয়েলার্সে বিক্রয় করতে গেলে দরকষাকষির এক পর্যায়ে দোকানের মালিকের সাথে তাদের দামের বনিবনা না হওয়ায় ভুক্তভোগী ও তার স্বামী সেখান থেকে বের হয়ে অন্য জুয়েলার্সে’র দোকানে যেতে চায়। এসময় খোকন কুমার রায় (৫৫), দোকানের কর্মচারী খুশি (৩৫) তাদের আটকে ওই মহিলার শরীরে হাত দিয়ে জোরপূর্বক বসানোর চেষ্টা করেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে কর্মচারী খুশি তার স্বামীকে গলা চেপে ধরে এবং এলোপাথারি মারপিট করতে থাকে। তারা গুরুতর আহত হলে আশেপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জুয়েলার্স’র মালিক ও তার ছেলেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আরও পড়ুন : পীরগঞ্জে শিশুকে হাত-পা বেঁধে পাষবিক নির্যাতন; পিতা ও সৎ মা গ্রেপ্তার!

এঘটনায় ওই নারী গত শনিবার রাতে ৫জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩জনের নামে সদর থানায় একটি মামলা করেন। পরে কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার ঠাকুরগাঁও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুললে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে সদর থানায় আটক থাকাকালে কথা হয় এ প্রতিনিধির। এসময় হ্যাপী জুয়েলার্স এর মালিক খোকন কুমার রায় ও তার ছেলে দন্ত চিকিৎসক চিরন্তন কুমার রায় শুভ জানান, ওই ব্যক্তি গত বৃহস্পতিবারও দোকানে এসেছিলেন, এসময় তাদের বর্তমান বাজার মূল্যের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। এর পর শনিবার পুণরায় দোকানে এসে দর কাষাকষি করতে থাকেন। এদিকে শনিবার সনাতনী রীতি অনুযায়ী পহেলা বৈশাখ হওয়ায় বাসায় পুজা-অর্চনা ছিলো এজন্য তাদের পরদিন আসতে বলে খোকন রায় বাসায় চলে যান। কিন্তু তারপরও ওই ক্রেতা দোকানের কর্মচারীর সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে প্রথমে কর্মচারীকে চড়-থাপ্পর মারেন। এতে তার সহযোগী আরেক কর্মচারী ক্ষিপ্ত হয়ে উভয় পক্ষের মারপিটের ঘটনা ঘটে।পরক্ষণে তারা তা সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে সদর থানার ওসি কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মারপিটের ঘটনায় মামলার প্রেক্ষিতে দুজন আসামী গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।

ডেস্ক/বিডি/প্রতি

  • কারাগারে দোকান মালিক ও ছেলে
  •    

    কপি করলে খবর আছে