পুলিশ থেকে বরখাস্ত হয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হোতা! অতঃপর খুন

লেখক: বাংলা ২৪ ভয়েস ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ মাস আগে

প্রতিপক্ষের হামলায় কুমিল্লার দাউদকান্দিতে রাহেজুল আমিন বাধন (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ হামলার ঘটনায় আরো ৫ জন আহত হয়েছেন। নিহত রাহেজুল ওই গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে। তিনি নোয়াখালী জেলা পুলিশের বরখাস্তকৃত পুলিশ কনস্টেবল। আজ রবিবার দুপুরে উপজেলার বাশরা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আজ রবিবার সকালে বাশরা গ্রামের বাড্ডাবাড়ীতে হামলা করে কিশোর গ্যাংয়ের হোতা বাধন ও তার কিশোর গ্যাংয়ের লোকজন। এতে নুরু মিয়ার ছেলে হাছান (৩৫) আহত হন। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকার লোকজন সকাল সাড়ে ১১টায় বাধনের বাড়িতে হামলা করে। হামলাকারীরা বাধনের ঘরে প্রবেশ করে তাকে টেনেহিঁচড়ে বের করে দালানের প্রধান ফটকের সামনে নিয়ে গিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে ফেলে রেখে যায়।

আরও পড়ুন : রাণীশংকৈলে ট্রলির চাকায় পিষ্ট হয়ে বাবার সামনেই ছেলের মৃত্যু!

পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলায় আহত বাধন, তার মা এবং তার ভাই সুমনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পর বাধন মারা যায়।

নিহত বাধনের ভাবি আয়েশা আক্তার বলেন, ‘দক্ষিণ পাড়ার হাসেম, রুবেল ও মানিকসহ ২০/২৫ জনের সন্ত্রাস বাহিনী রামদা, হকিস্টিক ও লোহার পাইপ নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে। তাদের ভয়ে আমার দেবর বাধন পাশের রফিক কাকার দালানে আশ্রয় নেয়। সেখানে গিয়েও তাদের হাত থেকে সে বাঁচতে পারেনি। সন্ত্রাসীরা আমাদের ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে।’

দালানের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাধন আমার বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা ঘরের দরজা-জানালা ভেঙে তাকে বের করে এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে বিল্ডিংয়ের সামনে ফেলে রেখে যায়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানায়, বাধনের অত্যাচারে এলাকার সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। কোনো জমি-জামা, দালান নির্মাণ ও অনুষ্ঠান করলেই তার কিশোর গ্যাংকে চাঁদা দিতে হত। তার অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই উল্টো হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানি করত। বাসরাসহ আশপাশের গ্রামের লোকজন বাধনের অত্যাচার থেকে বাঁচতে এবং তার বিচারের দাবিতে ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পুটিয়া এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছিল।

দাউদকান্দি গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থল থেকে বাধনসহ তার পরিবারের আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য দ্রুত গৌরীপুর হাসপাতালে পাঠাই। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হলে সেখানে বাধন মারা যায়। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। পাশাপাশি এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাধন পুলিশের কনস্টেবল পদে নোয়াখালী জেলা পুলিশে কর্মরত ছিল। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের কারণে প্রায় দুই বছর আগে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ ৭টি মামলা রয়েছে।’

ডেস্ক/বিডি

  • কিশোর গ্যাংয়ের হোতা! অতঃপর খুন
  •  

    কপি করলে খবর আছে