সরকারি ট্যাব পায়নি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা; বৈষম্যের শিকার বলেছন শিক্ষক-অভিভাবক

লেখক: বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ মাস আগে

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে জনশুমারীতে ব্যবহৃত সরকারি ট্যাব বিতরণে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে বালিয়াডাঙ্গী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে দিনাজপুর বোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১, ২ ও ৩নং রোলের ২১৬ শিক্ষার্থীকে ট্যাব প্রদান করা হলেও মাদরাসার কোন শিক্ষার্থীকে প্রদান করা হয়নি। এতে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন মাদরাসার শিক্ষক ও অভিভাবকগণ।

অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, মাদরাসায় পড়ার কারণে আমাদের সন্তানদের অবহেলা করা হয়েছে। যা মোটেই কাম্য নয়। আর মাদরাসার শিক্ষকরা বলছেন, এ ঘটনার পর অভিভাবকদের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে আমাদের। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা।

জানা গেছে, গেল জনশুমারিতে ব্যবহারের জন্য জেলায় প্রায় ৩৭০০টি ট্যাব কেনা হয়। এর মধ্যে আজ সোমবার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ৩৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১, ২ ও ৩নং রোলের শিক্ষার্থীকে ২১৬টি ট্যাব আনুষ্ঠনিক ভাবে তুলে দেওয়া হয়। ট্যাব বিতরণ অনুষ্ঠানে বালিয়াডাঙ্গী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. দবিরুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন, উপজেলা পরিসংখ্যান তদন্তকারী কর্মকর্তা আসমা আমিনসহ ৩৬টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এতে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন : ঠাকুরগাঁওয়ে প্রান্তিক দুস্থ নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন শীর্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন 

মধুপুর নয়াদিঘী এম রফিক আলিম মাদরাসার ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী বেবী আকতারের বাবা মোজাম্মেল হক বলেন, স্কুলে পড়ুয়া ১, ২ ও ৩নং রোলের শিক্ষাথীরা ট্যাব পেয়েছে। এ খবর জানার পর মেয়েটার মন খারাপ। আমিও অবাক হয়েছি। স্কুলের ছেলে মেয়েরা পেলে মাদরাসার ছেলে-মেয়েরা পাবে না কেন?

বড়পলাশবাড়ী ইসলামিক আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ কুসুম উদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, প্রতিটি স্কুলের ৬ জন শিক্ষার্থীকে ট্যাব প্রদান করা হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা কেন পেল না, কবে পাবে? এমন নানা প্রশ্নের সম্মুখি হতে হচ্ছে আমাদের। আমি মনে করি আমাদের শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হয়েছে। আগামীকাল ভার্চুয়ালি মিটিং রয়েছে বোর্ডের সচিব ও উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে। সেখানে বিষয়টি তুলে ধরবো দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিসংখ্যান অফিস ও ইউএনও। আমি অনুষ্ঠানে থেকে শুধু সহযোগিতা করছি। মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হলেন কিনা এমন প্রশ্নে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

জানতে চাইলে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল কুমার বলেন, নীতিমালায় রয়েছে এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরণ করতে হবে। আমরা নীতিমালা অনুসরণ করে বিতরণ করেছি। এমপিও ভুক্ত মাদরাসার শিক্ষার্থীদের ট্যাব দেওয়া যাবে এমন নীতিমালা থাকলে আপনি আমাকে দেখান।

তবে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা দায়িত্বে থাকার ভারপ্রাপ্ত পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ও ঠাকুরগাঁও জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপপরিচালক মাজেদুল ইসলাম বলেন, প্রথমত নির্দেশনা ছিল মাধ্যমিকের এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়ের পাশাপাশি সরকারি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের ট্যাব দেওয়া যাবে। পরে সেই নির্দেশনা সংশোধন হয়েছে। আমি একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে ঢাকায় অবস্থান করছি। ফিরে গেলে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ট্যাব প্রদানের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান তিনি।

ডেস্ক/বিডি/এএম

  • বৈষম্যের শিকার
  • মাদরাসার শিক্ষার্থীরা
  •    

    কপি করলে খবর আছে