৪৫ বছর আগে বাবার বিক্রিত জমিকে নিজের দাবি, কাউন্সিলরকে ফাঁসাতে মিথ্যে অভিযোগ

লেখক: নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১ বছর আগে

৪৫ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৭৭ সালে বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় যে জমি বিক্রি করে গেছেন সেই জমিকে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে আসছে এক পরিবার। অথচ এরমধ্যে সেই জমি হাত বদল হয়েছে আরও দু’বার। মানবিক কারণে ওই জমিটি কেনার পরও তাদের থাকতে দেওয়া হলে এখন সেটি নিজেদের দাবি করে উল্টো জমি ক্রয়কারিকে ফাঁসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরিবারটি বলে অভিযোগ জমিটির সর্বশেষ ক্রেতার।

ঘটনাটি ঠাকুরগাঁও সদরের ছিট চিলারং নামক এলাকার। গত ৭ডিসেম্বর জমির সর্বশেষ ক্রেতা ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুদ্দৌলা সাহেব তার ক্রয় করা বাসায় আসবাপত্র ঢুকাতে গেলে উভয়পক্ষ বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে কাউন্সিলর সাহেবকে মারধরসহ লাঞ্ছিত করা হয় বলে জানান তিনি। এছাড়াও এ ঘটনায় তিনি ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন।

কাউন্সিলর সাহেব জানান, ১৯৭৭ সালে জমির মূল মালিক তরিকুল্লাহর কাছ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌস সুবেদার সাড়ে আট শতক জমি খরিদ করেন। সে মোতাবেক জমির কাগজপত্র দেখে ২০১৯ সালে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌস সুবেদারের কাছ থেকে ১৪২৬০নং দলিলমূলে সাড়ে পাঁচ শতক জমি ক্রয় করেন। যার মৌজা-ছিট চিলারং, জে.এল-১১৪, খতিয়ান এস.এ-১৮ ও ২৫, খারিজ নং-১৬৪। এখানে ৩৩৪ দাগে আড়াই শতক ও ৩৩১ দাগে ৩ শতকসহ মোট সাড়ে পাঁচ শতক জমি বাড়ীসহ ক্রয় করেন তিনি। এছাড়াও ২০১৯ সালে ৩৩৩ দাগের রেকর্ডীয় মালিক মৃত: আবুল হাসনাতের দুই ছেলে আখতার হোসেন ও আকরাম হোসেন মিঠু’র নিকট হতে ১১শতক জমি ক্রয় করেন তিনি। যার দলিল নং-২৭৩২০, জে.এল-১১৪, খতিয়ান-আগত ২৩,৪৮ ও ৫, খারিজ নং-১০৫।

অর্থাৎ কাউন্সিলর সাহেব ৩৩১,৩৩৩ ও ৩৩৪ তিন দাগে মোট সাড়ে ১৬ শতক জমি (বাড়ীসহ) ক্রয় করেন। এ অবস্থায় ওই জমিতে মাহমুদা নামে তার এক মামীকে বসবাস করতে দেন এবং মানবিক কারণে মুল জোতদার তরিকুল্লাহর ছেলে মোজাম্মেল হক এর পরিবারকেও সেখানে থাকতে দেন।

কাউন্সিলর একরামুদ্দৌলা সাহেব জানান, সম্প্রতি তার ক্রয় করা বাসাতে শোয়ার খাট ঢুকাতে গেলে তরিকুল্লাহর ছেলে মোজাম্মেল হক ও তার স্ত্রী তৌহিদা পারভীন তাকে বাঁধা প্রদান করেন।এসময় হামলাকারিরা তার মামীর রান্নার ঘর ভেঙ্গে দেন এবং তার উপর হামলা চালিয়ে তাকে আহত ও লাঞ্ছিত করেন। এতে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ সুযোগে মোজাম্মেল হক ও তার স্ত্রী তৌহিদা পারভীন এর ভাড়াটে লোকজন তার মামীর ঘরে প্রবেশ করে ঘরে রক্ষিত ৮০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যান বলে জানান তিনি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

কাউন্সিলর সাহেব এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায় বিচারের দাবি জানান। তিনি বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও আজ আমার এ অবস্থা করেছে, সাধারণ মানুষ হলে এখানে খুনাখুনির মতো ঘটনা ঘটাতো তারা। আমি তাদের বিচারের দাবি জানাই।

ঠাকুরগাঁও সদর থানা সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটি জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে উল্লেখিত জমিতে কোন প্রকার কাজ না করার নির্দেশ দেন। উভয় পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জানিয়ে থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়-উভয় পক্ষের কাগজ-পত্র পর্যালোচনা শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

বিডি/ডেস্ক

  • কাউন্সিলরকে ফাঁসাতে মিথ্যে অভিযোগ
  •    

    কপি করলে খবর আছে