পীরগঞ্জে বালুর পরিবর্তে মাটি দেওয়ায় সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ করলেন প্রকৌশলী!

লেখক: পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১ বছর আগে

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে পাকা রাস্তা পুনঃস্থাপন ও প্রশস্ত করণ কাজে পাথরের সাথে বালুর পরিবর্তে মাটি মেশানোর অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকালে কাজ বন্ধ করে দিয়ে পাথর ও মাটি মিশ্রনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী।

উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকায় পীরগঞ্জ পৌর শহরের টিএন্ডটি থেকে চৌরঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ৬ কিঃ মিঃ পাকা রাস্তা পুনঃস্থাপন ও প্রশস্ত করণের জন্য গত বছরের প্রথম দিকে কাজ শুরু করেন এস এম মঈন নামে ঠাকুরগাঁওয়ের এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

পাকা রাস্তার দু’ধারে গর্ত খুড়ে রেখে দীর্ঘ দিন কাজ বন্ধ রাখেন তিনি। এতে ভোগান্তিতে পড়ে রাস্তায় চলাচলকারীরা। এরপর এলাকাবাসীর পীড়াপিড়িতে গত জুন-জুলাই মাসে খুড়ে রাখা সে গর্ত মাটি দিয়ে ভরাট করে ঠিকাদারের লোকজন। এরপর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পৌর শহরের টিএন্ডটি থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিঃ মিঃ রাস্তার কার্পেটিং তুলে সাথেই রোলার করে আবার কাজ বন্ধ রাখেন ঠিকাদার।

কাজ বন্ধ থাকা সময়ে ঐ রাস্তায় নিয়মিত পানি ছিটানোর কথা থাকলেও তা করা হয়নি। পানি না দেয়ায় রাস্তার ধুলা বালিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে এলাকার বাসিন্দাসহ ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী জাবরহাট, বৈরচুনা ও সেনগাও ইউনিনেয়র কয়েক লাখ মানুষ। যানবাহনের ধুলায় রাস্তার দু’ধারের বসবাসকারীদের অনেকের শাসকষ্টসহ এজমা জনিত রোগে আক্রান্ত হন।

আরও পড়ুন : ঠাকুরগাঁওয়ে মহাসড়কে চাঁদাবাজি কালে হাইওয়ে পুলিশের হাতে আটক-১, থানায় মামলা 

এলাকার লোকজন আবারো ধরনা দেন কাজ বাস্তবায়নে নিয়োজিত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরও দ্রুত কাজ বাস্তবায়ন করার জন্য চিঠি দেন ঠিকাদারকে। এতেও ঘুম ভাঙ্গেনি ঠিকাদারের। অবশেষে ঠিকাদার তার মর্জি মত কয়েকদিন আগে কাজ শুরু করেন। রোলার করা কার্পেটিং এর উপরে পাথর-বালির কাজে পাথরের সাথে বালু না মিশিয়ে মাটি মিশিয়ে কাজ করছেন। পানি, মাটি আর পাথরের ঐ মিশ্রন অন্যত্র থেকে ট্রাকে করে এনে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। এরপর রোলার করা হলে পুরো রাস্তা কাদায় ভরে যাচ্ছে। কাদা ভরা ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে সমস্যায় পড়ছেন পথচারীরা। এলাকাবাসী এর প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।

বিষয়টি নিয়ে সোমবার উপজেলা পরিষদে উপজেলা আইন শৃংখলা সভায় ব্যাপক আলোচনা হয়। এর পর উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মতে মঙ্গলবার সকালে পরিদর্শন শেষে কাজ বন্ধ করে দেন উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ। তিনি জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপাতত কাজ বন্ধ করা হয়েছে। পাথরের সাথে মাটি মেশানো হয়েছে কিনা পরীক্ষার জন্য সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান আখতারুল ইসলাম জানান, ঐ রাস্তার কাজে পাথরের সাথে কাদা মিশানো হচ্ছে এমন অভিযোগ বিভিন্ন মহল থেকে তিনি পান এবং এ নিয়ে আইন শৃংখলা সভায় আলোচনা হয়েছে। পরে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ডেস্ক/বিডি/প্রতি

  • বালুর পরিবর্তে মাটি
  • সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ
  •    

    কপি করলে খবর আছে