ভুমি জরিপ ও নকশার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় আসা ভুমি জরিপ সার্ভেয়ারদের বিরুদ্ধে।ঘুষ না পেলে নড়ে না খাতাপত্র, হয়না জমিসংক্রান্ত কোনো কাজ।
সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ ও হন্তান্তরের অধিকার থাকলেও ভূমি সেবায় প্রতি ধাপেই অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন দেশের সাধারণ মানুষ। ভূমি সংক্রান্ত সেবা কার্যক্রমে ঘুষ লেনদেন, কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে সম্পত্তি আত্মসাৎ, রাজনৈতিক প্রভাব, ভোগদখলসহ এ খাতে চলছে লাগামহীন দুর্নীতি।
ঘুষ লেনদেন ও অনিয়ম এড়াতে ভুমি জরিপের শুরুতেই বিজ্ঞপ্তি ও মাইকিং এর মাধ্যমে জনগনকে জরিপের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে ভুমি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। চলতি বছরের মার্চ মাসে শুরু হয়েছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর মৌজার ভুমি জরিপ ও নকশার কাজ। সর্দার আমিন,বদর আমিন ও চেইন মেন সহ তিন জন করে ২৮ টি গ্রুপে ভাগ হয়ে এ কাজ সম্পাদনে মাঠে নেমেছেন তারা ।
স্থানিয় ভুক্তভুগিদের অভিযোগ প্রতি শতাংশ জমির জন্য এক থেকে পাচ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে নাহলে কাজ করতে অনিহা করছেন,কাগজের ভুল দেখাচ্ছেন ভুমি জরিপে আসা আমিনরা।অনেকে কাজের জন্য গিয়ে টাকার অভাবে কাজ সম্পন্ন না করে ঘুরেও এসেছে বলে জানান ভুক্তভুগিরা।
মোটা অংকের ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করে আমিনরা দাবি করেন, কাজের বিনিময়ে সন্তুষ্ট হয়ে কেউ খুশি করলে দোষের কি? অনেকে চা নাস্তা খরচ দেয় তবে এটা জোর করে ঘুষ নেয়া না ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সর্দার আমিন জানান বাহির থেকে আমরা এসে কাজ করছি খুশি করে কেউ যদি দু-চারশ টাকা দেয় এতে দোষের কিছু না ।
সর্দার আমিন আশরাফুল ইসলামকে লেন দেন করতে দেখা গেলে তিনি বলেন এটা আমাদের কাজের জন্য খুশি হয়ে দিচ্ছে তারা, তিনি আরো বলেন এ টাকা তো আমরা একা খাইনা উপরের অফিসারদেরও দেয়া লাগে ।
জানা যায়, ২০০৭-২০০৮ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর মৌজার পাচটি নকশা জরিপের কাজ শুরু হয় তিনটি নকশার কাজ শেষে ভুমি জরিপ বন্ধ হয়ে যায় ,এ বছর মার্চে জগন্নাথপুর মৌজার ২০৪৪ টি দাগে ৯৩৭ একর ভুমি জরিপের কাজ পুনরায় শুরু করে ভুমি জরিপ কতৃপক্ষ।
এ বিষয়ে সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার অনোয়ারুল ইসলাম বলেন,আমরা মাইকিং করে জানিয়ে দিয়েছি ভুমি জরিপ কাজের বিনিময়ে কেউ কোনো অর্থ দিবেননা , এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আমরা দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো এবং যাদের কাজ সম্পন্ন হয়নি তাদের চিন্তার কোনো কারন নেই, খুব শীগ্রই তাদের কাজ সম্পন্ন করা হবে ।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মো: সামসুজ্জামান বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি জরিপ কাজের মাধ্যমে কোনোরকম অসাধু পথ অবলম্বন করেন, এ ধরনের অভিযোগ আসলে আমরা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো ।
ডেস্ক/বিডি
কপি করলে খবর আছে