ঠাকুরগাঁওয়ে বৃদ্ধ দম্পতিকে বের করে দিয়ে দরজায় তালা দিলো ইউপি চেয়ারম্যান!

লেখক: বাংলা ২৪ ভয়েস ডেস্ক
প্রকাশ: ২ মাস আগে

ঠাকুরগাঁওয়ে বৃদ্ধ দম্পতিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে দরজায় তালা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান লিটন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালন করছেন।

বৃদ্ধা দম্পতি আব্দুল হালিম ও জোৎসনা বেগম জানান, গত ১০ দিন পূর্বে পৌর শহরে ওয়ার্ড-১ দক্ষিণ সালন্দর শান্তিনগর এলাকায় স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষিকার বাসা ভাড়া নেন। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬ টায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও তার লোকজনসহ দম্পতিকে ঘুম থেকে ডেকে টেনে হিচরে বাহিরে বের করে দেন এবং বাড়ির মূল ফটকে তালা দিয়ে হুমকি প্রদর্শন করেন। এ প্রতিবেদন লেখা  পর্যন্ত ৬০ ঘন্টা ধরে ওই দম্পতি বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। সরেজমিনে তাদের বাসার বাইরে এক বেঞ্চে বসে থাকতে দেখা গেছে।

এই দম্পতির আক্ষেপ, আমরা ভাড়াটিয়া উঠেছি। জায়গা জমি নিয়ে বাড়ির মালিক ও চেয়ারম্যানের মধ্যে কি সমস্যা আছে সেটা তাদের বিষয়। কিন্তু আমাদের সাথে এমন অন্যায় কেন করা হলো? আমরা বিচারের দাবি জানাই।

আব্দুল হালিম বলেন, তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানির ট্রাক চালান। এভাবে এমন পরিস্থিতিতেও বাইরে স্ত্রী সন্তানদের রেখে কাজে যেতে হয়। আমাদের হাড়ি পাতিল, আসবাপত্র কাপড় চোপড় সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সবই বাড়ির ভেতরে।  ভেতরে এখন অন্য অপরিচিত ব্যক্তিরা অবস্থান করছে।

বাড়ি ভাড়া দেয়া স্কুল শিক্ষিকা ফারহানা কলি বলেন, ঘটনাটি দু:খ জনক। এটি  পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত  এলাকা।  এখানে স্থানীয় কাউন্সিলর রয়েছে। ঘটনার দিন আমার স্বামী কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানিয়েছে। এখনো সমাধান আসেনি। একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কোন আইনে অন্যের বাড়িতে অনুপ্রবেশ করে এমন ন্যাক্কার জনক ঘটনা ঘটাতে পারে? পুলিশকেউ জানিয়েছি। পুলিশ ঘটনা স্থান পরিদর্শন করে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, তালাতে হাত দিলে হাত কেটে নিবে চেয়ারম্যান এমন হুমকিও আমাদের দিয়েছে! আমরা এখন প্রত্যেকে আতঙ্কিত ও অনিরাপদ। ভাড়াটিয়ারা আমার বাড়িতেও যেতে চায়না। এখন তাদের মাঝে অনেক রাগ আক্ষেপ রয়েছে আমাদের সবার উপর।

স্থানীয় গৃহবধূ আমিনা বেগম বলেন, তালা দেয়ার পর থেকে তারা আর ঘরে ঢুকতে পারেনি! আমার স্বামী দিনমজুর। সে কলি আপার বাড়িতে বেড়া বানানোর কাজ করছিলেন। আমাদেরকেউ ভয় দেখিয়েছে চেয়ারম্যান।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর জমিরুল ইসলাম ঘটনা শুনে প্রথমে স্থান শনাক্ত করতে পারছিলেন না। এই প্রতিবেদক ঘটনাটা জানালে স্কুল শিক্ষিকার স্বামী জুয়েল ইসলাম তাকে একবার ফোন করেছিলেন এটি নিশ্চিৎ করেছেন।  এছাড়াও ভাড়াটে আব্দুল হালিমের কাছেও তিনি ঘটনাটি শুনেছেন।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান লিটন মুঠোফোনে জানান, সেখানে স্থানীয়দের সাথে জমি সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। আমি দুদিন সেখানে গিয়েছি।  অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মীরাও গিয়েছিলো। এ সময় তিনি তালা দেয়া ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানিয়েছিলেন কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি সরাসরি স্বাক্ষাৎকার নিতে এ প্রতিবেদক কে সরাসরি দেখা করতে বলেন।

পুলিশের এস আই নির্মল রায় জানান,  ৯৯৯ এ জমি নিয়ে কলোহের কল পেয়ে সেখানে যাওয়া হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডেস্ক/বিডি/টিএইচ
  • ঘর থেকে বের করে দরজায় তালা
  •    

    কপি করলে খবর আছে