রাণীশংকৈলের ৪ ইউনিয়নকে শিশুশ্রম মুক্ত ঘোষণা করা হলেও বাস্তব চিত্র উল্টো!

লেখক: আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও
প্রকাশ: ১১ মাস আগে

প্রতিবছর ১২ জুনকে শিশুশ্রম বিরোধী দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। ১৪ বছরের কম বয়সীদের দিয়ে কাজ না করিয়ে তাদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যেই দিবসটি পালিত হয়। শিশুশ্রম বন্ধে প্রকল্প হাতে নিয়ে কয়েক বছর ধরে ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলায় শিশুশ্রম নিরসনে কাজ করছে ইকো স্যোশাল ডেভেলপমেন্ট (ইএসডিও) নামে একটি বেসরকারি সংস্থা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংস্থাটির এই প্রকল্পটি ইতোমধ্যে ওই উপজেলার ধর্মগড়, নেকমরদ, লেহেম্বা, বাচোর ইউনিয়নকে শিশুশ্রম মুক্ত ঘোষণা করছে। ওই প্রকল্পের দায়িত্বরতরা গত সোমবার (১২জুন) রানীশংকৈলে উপজেলা পরিষদ হলরুমে বিশ্ব শিশুশ্রম বন্ধ দিবস পালন করে এ ঘোষণা দেন।
কিন্তু শিশুশ্রম প্রকল্প কমিটি চার ইউনিয়নকে শিশুশ্রম মুক্ত ঘোষণা করলেও বাস্তব চিত্র পুরোই উল্টো। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় এক হোটেলে দিন ৩০০ টাকার বিনিয়মে কাজ করছে শিশুশ্রম মুক্ত ঘোষিত লেহেম্বা ইউনিয়নের বারো বছরের রিসাদ ইসলাম। বাচোর ইউনিয়নের আবুল কাইয়ুম শাহীন ইলেকট্রিক ওয়ার্কসপে ঝালাইয়ের কাজ করছে।
শাহীন জানায়, আট মাস ধরে সে ঝালাইয়ের কাজ করছে। দিনে এক বেলা খেয়ে ১০০ টাকা মজুরী পায় সে। শুধু শহীন, রিসাদ নয় আরো অনেক শিশু ওই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শ্রমে ঘাম ঝড়াচ্ছে।
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী, একটি শিশুকেও তার জীবিকা নির্বাহের জন্য কোনো প্রকার শ্রমে নিয়োজিত করা যাবে না। কিন্তু বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে শিশুরা শ্রমে জড়িত।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলছেন, দেশের অনেক এনজিও শিশুদের জন্য বিদেশ থেকে যে তহবিল সংগ্রহ করে, তার কতটুকু শিশুদের জন্য ব্যয় হয়, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। একটি বেসরকারী সংস্থা সেমিনার করে ৪টি ইউনিয়নকে শিশুশ্রম মুক্ত ঘোষণা করেছে। কিন্তু ওই ৪ ইউনিয়নে গিয়ে দেখেন শিশুরা মাঠে, দোকানে কাজ করছে। যা তদন্তের প্রয়োজন। কারন, যে কারনে প্রকল্প নেয়া হয়েছে তা কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে।
এদিকে শিশুশ্রম প্রকল্পের ম্যানেজার আকলিমা বেগম রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ, ধর্মগড়, লেহেম্বা ও বাচোর ইউনিয়নকে শিশুশ্রম মুক্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।
আর প্রকল্পের সভাপতি ও রানীশংকৈলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ জানান, শিশুশ্রম বন্ধে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। শিশুদের কতিপয় অসাধু ব্যক্তি নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে টেনে নিচ্ছে। তবে এরকম তথ্য পেলে আমরা এটি বন্ধে দ্রুত প্রদক্ষেপ নিবো।
ডেস্ক/বিডি/আকাশ
  • শিশুশ্রম মুক্ত ঘোষণা
  • ৪ ইউনিয়ন
  •    

    কপি করলে খবর আছে