স্বাধীনতার ৫২ বছরে ২০জন রাষ্ট্রপতির বিদায় হয়েছিলো যেভাবে…

লেখক: বাংলা ২৪ ভয়েস ডেস্ক
প্রকাশ: ১ বছর আগে

রাজসিক সংবর্ধনার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে বিদায় নিয়েছেন মো. আবদুল হামিদ। তিনি ছিলেন দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি। স্বাধীনতার ৫২ বছরের ইতিহাসে আবদুল হামিদের আগে দেশে ২০ জন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও তাদের কেউ পাননি এরকম রাজসিক বিদায়।

২৪ এপ্রিল, সোমবার নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের পর দুপুরে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয় আবদুল হামিদকে।

আগের ২০ রাষ্ট্রপতির মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান খুন হন। বাকিদের মধ্যে অনেকে মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। আবার কেউ কেউ মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেও আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা পাননি।

আরও পড়ুন :ট্রলারে ভেসে আসা ১০ মরদেহের পরিচয় সনাক্ত; রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ!

দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মম নিহত হন। দেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।

তৃতীয় রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী মেয়াদ শেষ না করেই বিদায় নেন ১৯৭৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর। চতুর্থ রাষ্ট্রপতি হিসেবে মুহম্মদউল্লাহও ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি মেয়াদ শেষ না করেই বিদায় নেন এবং সে সময় আবারও রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাষ্ট্রপতি পদে ক্ষমতায় আসেন খন্দকার মোশতাক আহমদ। কিন্ত ক্ষমতা দখলের কয়েক মাস পরে অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে ৬ নভেম্বর বিদায় নিতে হয় তাকে।

এরপর রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েম। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল তাকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় বসেন সেনা শাসক জিয়াউর রহমান। ১৯৮১ সালের ৩০ মে নিহত হন তিনি। জিয়ার পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার এবং ১৯৮১ সালের ২০ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি হন।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ আব্দুস সাত্তারকে সরিয়ে এএফএম আহসান উদ্দিন চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতির পদে বসান তৎকালীন সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। পরে তাকে সরিয়ে ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর নিজেই দেশের রাষ্ট্রপতি পদ দখল করেন। গণআন্দোলনে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন এরশাদ।

এরশাদের পতনের পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব আসেন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। নির্বাচন দিয়ে ১৯৯১ সালের ৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির পদ ছেড়ে প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে ফিরে যান তিনি।

১৯৯১ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ১৯৯৬ সালের ৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন আবদুর রহমান বিশ্বাস।

আরও পড়ুন : প্রধানমন্ত্রীর ১৫ দিনের সফরসূচি চূড়ান্ত

আবদুর রহমান বিশ্বাসের পর সাহাবুদ্দীন আহমদকে আবারও রাষ্ট্রপতির পদে বসায় আওয়ামী লীগ সরকার। পাঁচ বছর রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব সামলে ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর তিনি বিদায় নেন তিনি।

সাহাবুদ্দীনের পর বিএনপি আমলে রাষ্ট্রপতি হন একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। বিএনপি সরকারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে ২০০২ সালের ২১ জুন পদত্যাগ করে বঙ্গভবন ছাড়েন তিনি।

বদরুদ্দোজার বিদায়ের পর আসেন মো. জমিরউদ্দিন সরকার। ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তারপর রাষ্ট্রপতি করা হয় ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে। মেয়াদ শেষে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদায় নেন তিনি।

আবদুর রহমান বিশ্বাস, সাহাবুদ্দীন আহমদ ও ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ তাদের মেয়াদ পূর্ণ করলেও কোনো রকম বিদায়ী আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া অনেকটা নীরবেই বঙ্গভবন ছাড়তে হয তাদের।

২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন জিল্লুর রহমান। চার বছরের মাথায় তিনি মারা যান।

এরপর রাষ্ট্রপতি হন আবদুল হামিদ। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৪১ দিনসহ টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১০ বছর ৪১ দিন রাষ্ট্রপতির চেয়ারে ছিলেন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছেন তিনি।

ডেস্ক/বিডি

  • রাষ্ট্রপতির বিদায়
  • স্বাধীনতার ৫২ বছর
  •    

    কপি করলে খবর আছে