ঠাকুরগাঁওয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন মানবিকে; স্বপ্ন ভঙ্গ ফাহিমের!

লেখক: নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ মাস আগে

১০ বছরের স্বপ্ন একটি ভূলে পন্ডুল হয়ে গেছে এসএসসি পরীক্ষার্থী ফাহিমের। বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করলেও তাকে এখন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে মানবিক বিভাগে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মথূরাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৩ শিক্ষা বর্ষের এসএসসি পরিক্ষার্থী ফাহিম আহম্মেদ। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছে বিজ্ঞান বিভাগে। পরীক্ষার আগের দিন প্রবেশ পত্র হাতে নিয়ে দেখে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে মানবিক বিভাগে। তাই তাকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করেও মানবিকের হয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হচ্ছে। যা মেনে নিতে পারছেনা ফাহিম ও তার পরিবার।

জানা যায়, রেজিস্ট্রেশন করার সময় শারিরিকভাবে অসুস্থ্য হওয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূলের কারণে ফাহিমের রেজিস্ট্রেশন হয় মানবিক বিভাগে। আবার রেজিস্ট্রেশনের পরে প্রিন্ট কপিতে তাকে না জানিয়ে স্বাক্ষরও নেওয়া হয় এমন অভিযোগ তুলছেন এসএসসি পরিক্ষার্থী ফাহিম আহম্মেদ। শুধু ফাহিম নয় বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে মানবিক বিভাগে পরিক্ষা দিচ্ছে এ খবরে তার সহপাঠিরাও মেনে নিতে পারছে না।

আরও পড়ুন : শ্রমিক দিবসেও ছুটি নেই টাকার পাহারাদারদের

ফাহিমের একাধিক সহপাঠি জানান, দুই বছরে কোন শিক্ষক বলেনি তার রেজিস্ট্রেশন মানবিক বিভাগে হয়েছে। একসাথে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখাসহ ফরম ফিলাপ করেছি। ব্যবহারিকও এক সাথে করেছি। তাহলে ফাহিম মানবিকে কেমনে হয়?

ভূক্তভোগি ফাহিম জানায়, দুই বছর বিজ্ঞান বিভাগে পাঠ গ্রহন করেছি। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য যে ফি লাগে তা দিয়ে ফরম ফিলাপ করেছি। বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করে আমি মানবিক বিভাগে কেমনে পরিক্ষা দিব। বিষয়টি দেখার পরে বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করলে প্রধান শিক্ষক আমাকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে বলে। সে কারণে বাংলা পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছি। আমার বিভাগ পরিবর্তন না হলে আমি মানবিকের বিষয় গুলো পাশ করতে পারব না। একটি ভুলের কারণে আমার ১০ বছরের স্বপ্ন ভঙ্গের পথে। এ কষ্ট আমি মেনে নিতে পারছি না।

ফাহিমের মা ফাতেমা বেগম বলেন, অন্যের বাড়িতে কাজ করে ছেলেকে পড়ালেখা করাচ্ছি। আমার ছেলের সাথে এমন হয়েছে জানার পর বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না। পরীক্ষার আগের দিন থেকে বিষয়টি জানতে পেরে শিকক্ষকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমার ছেলেকে নিয়ে খুব আতংকে আছি। কোন সময় কি করে বুঝতে পারছি না। যে সময় কাগজে স্বাক্ষর নেয় তখন ফাহিম অসুস্থ্য ছিল। তারা না বলে স্বাক্ষর নিয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাধান করবে বলেছেন। সমাধান না হলে আমার ছেলের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে। প্রয়োজনে আমি আদালতের দ্বারস্থ হবো।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মথূরাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, এ ভূলের জন্য ফাহিম দায়ী। তার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে মানবিকে। সে দেখে শুনে প্রিন্ট কপিতে স্বাক্ষর করেছে। পরীক্ষার ১০ দিন আগে প্রবেশ পত্র দেওয়া হয়েছে। তখন কিছু বলেনি পরীক্ষার আগের দিন বিষয়টি অবগত করেছে। এতে আমরাও বিব্রত। তার ইচ্ছে অনুযায়ি বিভাগ পরিবর্তনের জন্য দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে চেস্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যার প্রফেসর কামরুল হাসান বলেন, মানবিক কারণে শিক্ষার্থীদের ভূল সংশোধন চলমান আছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আসলে সংশোধনের চেস্টা করা হবে।

ডেস্ক/বিডি/জোহা

   

কপি করলে খবর আছে