রাণীশংকৈলে রাজা টংকনাথের জমিদার বাড়ির সংস্কার কাজের উদ্বোধন

লেখক: বাংলা ২৪ ভয়েস ডেস্ক
প্রকাশ: ২ মাস আগে

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কুলিক নদীর পাশে অবস্থিত রাজা টংকনাথের জমিদার বাড়ি। অযত্ন-অবহেলা আর সংস্কারের অভাবে রাজবাড়িটি ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছিলো। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছিলো এটি। তবে সম্প্রতি জমিদার বাড়ি পরিদর্শন শেষে এর সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের সহকারী প্রত্নতাত্ত্বিক প্রকৌশলী মুরাদ হোসেন। সেইসঙ্গে এটিকে পর্যটন স্পট করার ঘোষণা দেন তিনি। এমন খবরে স্বস্তির হাসি ফুটেছে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের মুখে।
উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আ.লীগ সভাপতি সইদুল হক, পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা, এ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান শুভ, প্রেস ক্লাব সভাপতি মোবারক আলী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা তামিম হোসেন প্রমুখ।
এর আগে ২০১৯ সালে গেজেট হওয়ার পরও রাজবাড়ির সংস্কারের কাজ শুরু না হওয়ায় হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, এটি সরকারি গেজেটেড একটি স্থাপনা। এর মাধ্যমে সরকার আয় করতে পারবেন। সংস্কার না হওয়ার কারণে এটি বিলীন হয়ে যাচ্ছিলো। আর এটি সংস্কারের পাশাপাশি একটি পর্যটন কেন্দ্র হলে বিনোদন মিলবে।
তিনি আরও বলেন, গেজেটেড হওয়ার পর কাজ শুরু না হওয়ায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে জনস্বার্থে রিট পিটিশন দায়ের করি। পরে ২৯/০৮/২০২২ তারিখে শুনানি হলে বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ ‘রাজবাড়ি কেন সংস্কার, সংরক্ষণ, মেরামত ও পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে না’ মর্মে আঞ্চলিক পরিচালক, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বগুড়াকে রুল এবং ডিরেকশন দেন। এই নির্দেশনার প্রেক্ষাপটে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর পরিদর্শন শেষে আজ জমিদার বাড়ির সংস্কার কাজের উদ্বোধন করা হল।
হাইকোর্টের নির্দেশে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ জমিদার বাড়িটি প্রাথমিক সংস্কারের জন্য ১০ লাখ টাকা দরপত্র আহ্বান করেন। চুক্তি বদ্ধ হয়ে সংস্কারের কাজটি বাস্তবায়ন করছেন ঠিকাদার মেসার্স বকুল ট্রেডার্স।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মেহেদী হাসান শুভ বলেন, পুরোনো ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার চিন্তা থেকেই হাইকোর্টের নজরে জরাজীর্ণ রাজবাড়ীটির সংস্কারের বিষয়টি তোলা হয়েছিল।
রাণীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমার বয়স ৭০ বছরের বেশি। ছোটবেলা থেকে রাজবাড়িটি দেখে আসছি।  ধীরে ধীরে এটি ভঙ্গুর থেকে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। শুনলাম প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের লোকজন রাজবাড় কাজ শুরু করেছেন তারা। এটি জেনে খুব ভালো লাগছে।
স্কুলশিক্ষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, রাজবাড়ি সংস্কারের জন্য আমরা বার বার দাবি তুলেছি। মাদকসেবনের জন্য এটি একটি অন্যতম জায়গা হয়ে উঠেছিলো। অবশেষে একটি সুখবর পেলাম। আমরা এর সুবিধা না পেলেও পরবর্তী প্রজন্ম এর সুফল ভোগ করবে বলে আমরা আশা করছি।
ডেস্ক/বিডি/আকাশ
  • জমিদার বাড়ির সংস্কার
  •    

    কপি করলে খবর আছে